General rules of domestic puja: ঘরোয়া পূজার সাধারণ নিয়ম

rules-of-domestic-puja

সাধারণ মানুষের আগে জানা প্রয়োজন, কেন আমরা নির্দিষ্ট নিয়মে (rules of domestic puja) পূজা-পাঠ, হোম-যজ্ঞ করব। তার একমাত্র বিশেষ কারণ হল, পূজা অর্থে ভগবানকে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে ডাকা, শ্রদ্ধা করা, ভক্তি করা, আমাদের হৃদয়-মনের স্থানে বসানো।

মনের প্রেরণাকে আরো উজ্জীবিত করা। যে দেবদেবীকে মানুষ পূজা করে, তাকে নিজের ভালমন্দ সমর্পণ করার আর এক নাম পূজা।

এই সমস্ত দেবদেবীকে ডাকলে পার্থিব জগতের সমস্ত দুঃখ, কষ্ট, দারিদ্রতা, দুর্ভাগ্যকে জয় করে বা নিয়ন্ত্রণের দ্বারা সৌভাগ্যকে সহজেই জয় করতে সক্ষম হয়।

এই জগতসংসার বিশ্ব-মহামায়ার অধীনে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। পার্থিব জগতে যাহা কিছুর মধ্যে রূপ, রস, গন্ধ আছে তাহাই সাকার রূপ শক্তি মায়ার অধীনে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।

Table of Contents

rules of domestic puja

ঘরোয়া পূজার (Rules of domestic puja) নিয়ম প্রণালী

সুতরাং মানুষের জানা প্রয়োজন নিত্য পূজা -এর সাধারণ কিছু নিয়ম (Rules of domestic puja) আছে। আমরা সবাই জানি যে একজন পুরোহিত কিংবা ব্রাহ্মণের মতো নিখুঁত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পূজা করা একজন সাধারণ গৃহস্ত মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু তার এই অর্থ নয় যে আমরা puja করবোনা বা পূজার নূন্যতম নিয়মগুলো অনুসরণ করবোনা।

নিত্য গৃহ দেবতা পূজা হউক অথবা একটি বিশেষ তিথির অথবা বিশেষ দেবী-দেবতার পূজা, সব পূজার একটি সাধারণ নিয়ম (Rules of domestic puja) আছে। সেই নিয়ম অনুসরণ করে যেকোনো পূজা খুব অনায়াসে করে ফেলা যায়। 

যে যে বিষয় বা বস্তুর মালিক যে যে দেব বা দেবী তাদেরকে মনের একাগ্রতার মাধ্যমে, সঠিক নিয়মে (rules of domestic puja) পূজাপাঠ, জপ, ধ্যান করতে পারলে ব্রহ্মাদেব আশীর্বাদ করেন।  বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এই সমস্ত দেবদেবীর আরাধনার মাধ্যমে আমরা জগতের এবং নিজের কল্যাণ সাধন করতে পারি। 

ঘরোয়া পূজোর আগের দিন

যে দেবতা বা দেবীর puja করবেন, সেই দেবদেবীর প্রতি সম্পূর্ণ ভক্তি, বিশ্বাস ও মনোনিবেশ চিন্তায় নিষ্ঠা থাকতে হবে এবং আগের দিন নিরামিষ ভোজন ও পূজার দিনে উপোস থাকবেন তবে একেবারে নির্জলা উপবাসে থাকবেন না, বিশেষ করে গৃহী।

তার কারণ হল, আমরা নিরাকার ব্রহ্মের পূজা করি বটে কিন্তু সাকারের মধ্য দিয়ে নিরাকার ব্রহ্মের পূজা করি, অর্থাৎ এই বিশ্বজগতের সমস্ত মানুষই একমাত্র পরমাত্মাকেই সেবা করেন।

কেউ প্রত্যক্ষ আবার কেউ পরোক্ষ ভাবে পূজা, পাঠ, জপ, হোম, তর্পণ ইত্যাদি করেন সুতরাং সেই পরমব্রহ্ম বা পরমাত্মার সাকার রূপ হচ্ছে জগতের জীব তথা মানুষ। 

সেই কারণেই মানুষের হৃদয়ের আত্মাকে কখনো নির্জলা কষ্ট দিয়ে অন্যান্য দেব বা দেবীর পূজা করলে ভগবান রুষ্ট হয়। সর্বকার্য, আশা নিষ্ফল হয়।

domestic worship

ঘরোয়া পূজার (Rules of domestic puja) ধাপগুলি

1) আচমন

আচমন অনেক রকম পক্রিয়ায় করা যায়। তবে দুটি পক্রিয়া হচ্ছে পূজার জন্য পরিপূরক। তাছাড়া যারা খুব সহজভাবে কার্য সিদ্ধি করতে চায় তারা  শুধু বিষ্ণু স্মরণ করেও আচমন ক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে।

কিন্তু আমরা এতো সংক্ষিপ্ত আচমনের কথা বলবো না। তার কারণ আমরা মনে করি যারা পূজা পাঠ করতে ভালোবাসেন তারা নিজেদের মনের ভালোবাসা, ভক্তি থেকে পূজা করেন।

সেক্ষত্রে কিছু নিয়ম অন্তত মেনে চলা উচিৎ। তাতে নিজের করা পূজার প্রতি একটা সততা এবং নিজের মনে একটা ভালো অনুভব থাকে। নিম্নে সেই দুই পদ্ধতিতে ঘরোয়া পূজার আচমন পক্রিয়া উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম পদ্ধতিতে আচমন

গৃহকর্তা বা কর্ত্রী পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে বসে কুশ দিয়ে আংটি দুটি তৈরি করে দুই হাতে পার্শ্বের আঙ্গুলে ধারণ করবে এরপরে কোশা থেকে অল্প একটু শুদ্ধ জল নিয়ে মুখ শোধন করিবে।

যদি কুশের আংটি তৈরী করা সম্ভহব না হয় সেক্ষত্রে অনামিকা আঙুলের মাধ্যমে কোশা থেকে অল্প একটু শুদ্ধ জল নিয়ে মুখ শোধন করিবে।

মন্ত্রঃ- ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ এইভাবে তিনবার বলে জল মুখে নেবেন। হাতের তালুতে জল নিয়ে (হাতের তালুকে ব্রাহ্মতীর্থ বলে) এবারে ডান হাতের তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা দ্বারা মুখে ঠোঁটে স্পর্শ করে তর্জনী দিয়ে নাক স্পর্শ করিবে। অনামিকা আঙুল দিয়ে দুই চক্ষু ও দুই কান এবং কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে নাভি এবং ডান হাতের তালু দিয়ে হৃদয় ও দুই বাহুদ্বয় স্পর্শ করে (করজোড়ে)।

বিষ্ণু স্মরণ পাঠ করবে- ওঁ তদবিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম। ওঁ বিষ্ণুঃ, ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ, ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রোবা সর্বাবস্থাং গতোহপিবা যঃস্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং সবাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ, ওঁ সর্বমঙ্গলাঃ মঙ্গল্যং, বরেণ্যং বরদং শুভম। নারায়ণং নমস্কৃত্য সর্ব (অমুক) কর্মাণি কারয়েৎ, নমঃ মাধবো মাধবো বাচি, মাধবো মাধবো হৃদি, স্বরন্তি সাধবঃ সর্বে মমোসর্বকার্যেযু মাধবম।। নমঃ মাধবায় নমঃ (৩ বার)।।

দ্বিতীয় পদ্ধতিতে আচমন

মন্ত্রঃ- ওঁ কেশবায় নমঃ, ওঁ নারায়নায় নমঃ ওঁ মাধবায় নমঃ

এই তিন মন্ত্র দিয়ে আচমন করতে হবে। প্রতিবার হাত ধুয়ে নিতে হবে। তারপর হাতজোর করে পথ করে নিন্মলিখিত  মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে।

বিষ্ণু স্মরণ পাঠ করবে- ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সুরয়ো দিবীব চক্ষুরাততম্। তদ্‌ বিপ্রাসো বিপন্যবো জাগ্‌বাংসঃ সমিন্ধতে বিষ্ণোর্যৎ পরমং পদম্।। 

2) সঙ্কল্প

কুশীতে জল, তিল, হরীতকী ও পুষ্প লইয়া ডান হাতে ঢাকিয়া দক্ষিণ জানু মাটিতে রাখিয়া বলিবে- “বিষ্ণুরোম তৎসদদ্য… মাসি… পক্ষে…তিথৌ …গোত্রঃ শ্রী…দেবশর্মা (নিজের গোত্র ও নাম বলিবে)। শ্রী…দেবতা প্রীতিকামো (অথবা শ্রীবিষ্ণুপ্রীতিকামো) গণপত্যাদি নানাদেবতা পূজা পূর্বকং শ্রীশ্রী…দেবতা পূজনমহং করিয্যে” (পরের বাড়ির পূজা হইলে নিজের নামের পরে অমুকগোত্রস্য শ্রী অমুক দেবশর্মণ শ্রী… দেবতাপ্রীতিকামে… পূজনমহং করিষ্যামি বলিবে। পরে ঐ জলের কিঞ্চিৎ নিজের ঈশান কোণে ফেলিয়া দিয়া অবশিষ্ট জলাদি তাম্রকুণ্ডে ফেলে দিতে হবে। অতঃপর হাতজোড় করিয়া স্ববেদীয় সঙ্কল্পসূক্ত পাঠ করিতে হইবে।

3) আসনশুদ্ধি

নিজের আসনে একটি ত্রিকোণ মণ্ডল করিয়া তাহাতে এতে গন্ধপুষ্পে ‘হ্রং আধারশক্তিকমলাসনায় নমঃ’ বলিয়া একটি পুষ্প দিয়া আসনে হাত রাখিয়া পাঠ করিতে হইবে:-

আসনমন্ত্রস্য মেরুপৃষ্ঠঋষিঃ সুতলং ছন্দঃ কৃৰ্ম্মো দেবতা আসনপরিগ্রহণে বিনিয়োগঃ। ওঁ পৃথ্বি ত্বয়া ধৃতা লোকা দেবি ত্বং বিষ্ণুনা ধৃতা। ত্বঞ্চ ধারয় মাং নিত্যং পবিত্রঃ কুরু, চাসনম্।। 

এই বলিয়া আসনশুদ্ধি করিবে। অনন্তর আতপতণ্ডুল গ্রহণ করিয়া, সেই আসনের দশদিকে ছড়াইয়া ঊর্দ্ধে তালত্রয় দিয়া, তুড়ি দিয়া দশদিক বন্ধন করিতে হইবে। তাহার পর, আসনে উপবেশন করিয়া, কৃতাঞ্জলিপূর্ব্বক

বামে- ওঁ গুরুভ্যো নমঃ, ওঁ পরমগুরুভ্যো নমঃ ওঁ পরাপর-গুরুভ্যো নমঃ, ওঁ পরমেষ্ঠিগুরুভ্যো নমঃ। দক্ষিণে- ওঁ গণপতয়ে নমঃ। মধ্যে- জগন্নাথদেবতায়ৈ নমঃ বলিয়া প্রণাম করিতে হইবে।

4) জলশুদ্ধি ও কোষাকুষি স্থাপন

 কোষাকষির নীচে (ব) চিহ্ন এঁকে বসিয়ে কালো তিল, লাল ফুল, চন্দন, কাঁচা দুধ ও দই যব ইত্যাদি দিয়ে কোষা জলপূর্ণ করিবেন। এবারে (অঙ্কুশ মুদ্রা) দ্বারা অর্থাৎ ডান হাতের মধ্যমা ঐ কোষার জলে ঠেকিয়ে এবং বাম হাত দিয়ে ডান হাত ঢেকে ডান হাতের মধ্যমা ঐ জলে ঘোরাবে আর মন্ত্র বলবে- ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতী, নর্মদে সিন্ধু কাবেরি জলেহস্মিন সন্নিধিং কুরু।।

যদি এইসব মুদ্রা সম্পর্কে  জ্ঞান না থাকে অথবা করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ না হয় সেক্ষত্রে জলের পাত্র স্পর্শ করে মন্ত্র উচ্চারণে জলশুদ্ধি করা যেটা পারে।

5) পুষ্পশুদ্ধি

ফুল স্পর্শ করে- ওঁ পুষ্পে পুষ্পে মহাপুষ্পে সুপুষ্পে পুষ্পসম্ভবে। পুষ্পচয়াবকীর্ণে হুং ফট্ স্বাহা।

6) দ্বারদেবতা পূজা

 পুষ্প লইয়া “এতে গন্ধেপুষ্পে ওঁ দ্বারদেবতাভ্যো নমঃ” মন্ত্রে পূজাগৃহের দ্বারদেশে নিক্ষেপ করিবে। পরে “এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ব্রহ্মণে নমঃ” “এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বাস্তুপুরুষায় নমঃ” মন্ত্রে পূজা করিবে।

7) সূর্য্যার্ঘ্য নিবেদন ও সূর্য প্রণাম

 কুশীতে গঙ্গাজল, পুষ্প, চন্দন, দূর্বা, আতপ চাউল, তিল, যব দিয়ে দুই হস্তে স্পর্শ করে ধরিয়া মন্ত্র বলবে-“ওঁ নমো বিবস্বতে।

ব্রহ্মাণ ভাস্বতে বিষ্ণুতেজসে জগতসবিত্রে শুচয়ে সবিত্রে কর্মদায়িনে। ইদমর্থ্যং ওঁ নমো ভগবতে ভগবান শ্রীসূর্য্যায় নমঃ” বলে।

সূর্য্যপ্রণাম করিবে- ওঁ জবাকুসুমশঙ্কাসং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম। ধ্বান্তারিম সর্বাপাপঘ্ন প্রণতোহস্মিনদিবাকরম্।।

8) গণেশাদির পূজা

 প্রথমে গণেশ পূজা-ধ্যান-কূর্মমুদ্রায় লাল ফুল, চন্দন মাখিয়ে নিয়ে মন্ত্র- ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং প্রস্যন্দন্মদগন্ধলব্ধ মধুপব্যালোলগণ্ড স্থলম, দন্তাঘাত বিদারিতারি রুধিরৈঃ সিন্দুর শোভাকরং বন্দে শৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম।।

prarthona mudra
প্রার্থনা মুদ্রা

এরপরে ঘণ্টাবাদ্য সহ ফুল, চন্দন দ্বারা পূজা করবে। 

গাং এষ গন্ধো গণেশায়ঃ নমঃ (সুগন্ধ নিয়ে)-

গাং ইদং সচন্দন পুষ্পং গণেশায় নমঃ,

গাং এষ ধূপো গণেশায় নমঃ,

গাং এষ দীপো গণেশায় নমঃ,

মমো ইষ্ট দেব বা দেবী সম্প্রদানের সহিত গাং ইদং সোপকরণ এতদ্ অক্ষত নৈবেদ্যং গণেশায় নমঃ।

ইষ্ট দেব বা দেখীর সহিত গাং গণেশায়ৈ পাদুকায়ৈ পূজায়মিনমঃ, ইষ্ট দেব বা দেবীর সহিত গাং গণেশায়ৈ পাদুকায়ৈ তর্পয়ামিনমঃ।

গণেশ গায়ত্রী- ওঁ তৎপুরুষায় বিদ্মহে বক্রতুণ্ডায় ধীমহি তন্নো দন্তী প্রচোদয়াৎ।

গণেশ প্রণাম- (করজোড়ে)  ওঁ দেবেন্দ্র মৌলিকমন্দার মকরন্দ কনারুণাঃ, বিঘ্নং হরন্তু হেরম্ব চরণাম্বুজ রেণবঃ, একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদরং গজাননম। মমো সব্ব বিঘ্ননাশকরং দেবং হেরম্বং প্রণমাম্যহম্।।

9) নারায়ণাদির অর্চনা

একটি করিয়া গন্ধপুষ্প নিয়ে নিম্ন মন্ত্র বলে পূজার ঘটে বা তাম্রপাত্রে দিবেন। মন্ত্র: যথা-

এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ নারায়ণায় নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে মম শ্রীগুরুবে নমঃ গুরুকরণ না করিলে তারা বলবে এতে গন্ধপুষ্পে মম গুরু পিতা মাতায়ৈ নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ আদিত্যাদি নবগ্রহেভ্যো নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে ইন্দ্রাদি দশদিক পালেভ্যো নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে মৎসাদি দশাবতারেভ্যো নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে সর্ব্বেভ্যো (পূজনীয় অমুক) দেব বা দেবীভ্যো নমঃ।

Rules of domestic puja: বিশেষ পূজা শুরু

এরপরে যে কোন প্রধান বা মূল দেব বা দেবীর পূজাপাঠ শুরু করতে হবে। যেকোনো পূজা শুরু করার আগে উপরিউল্লিখিত পূজা পদ্ধতি (rules of domestic worship) অনুসরণ করে পূজা করা যাবে।

উপরিউল্লিখিত পূজাগুলো (rules of domestic worship)সম্পন্ন করে আসন প্রতিষ্ঠা, কিন্তু যদি প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহ অথবা ছবি থাকে তাহলে আসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হয়না। 

আসন প্রতিষ্ঠার পর স্নানাভিষেক পর্ব সম্পন্ন করতে হবে। স্নানাভিষেক পর্বের পর তিলক, শৃঙ্গার এবং দীপ ধুপ প্রজ্জলন করে মূল পূজা শুরু করতে হবে। আরতি করার আগে অথবা শৃঙ্গার পর্ব সেরে ভোগ নিবেদন করতে হবে।

Rules of domestic puja: ভোগ নিবেদন

ভোগ নিবেদনের জায়গাটা ভালো করে পরিষ্কার করে, প্রভুকে পরিষ্কার পাত্রে ভোগ নিবেদন করতে হবে।

Rules of domestic puja: আরতি পর্ব

সাধারণতঃ ধূপ প্রদীপ জলশঙ্খ বস্ত্র/রুমাল পুষ্প চামর এইগুলো দিয়ে নিত্য ঘরোয়া পূজা অথবা বিষয়ে পূজায় আরতি করা হয়ে থাকে। তবে শুধু ধূপ প্রদীপ পুষ্প দিয়েও নিত্য ঘরোয়া পূজায় আরতি করা যায়, যদি বাকিগুলো হাতের কাছে না থাকে।

আরতি করার পদ্ধতিঃ-

ধূপ দিয়ে শুধু সর্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে।

প্রদীপ দিয়ে চারবার পাদপদ্মে, দুইবার নাভিতে তিনবার মুখমণ্ডলে আর সর্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে। 

জলশঙ্খ দিয়ে তিনবার মুখমণ্ডলে আর সর্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে।

বস্ত্র/রুমাল, পুষ্প আর চামর দিয়ে শুধু সর্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে।

FAQs:-

তুলসী কী সব দেবী দেবতার পূজায় ব্যবহার করা যাবে?

স্ত্রীদেবতার পূজা করার সময় তুলসী ব্যবহার করা যাবেনা। শিব ঠাকুরকে তিনটি তুলসী দিয়ে পূজা করা যাবে। গণেশপূজায় তুলসী ব্যবহার করা যাবেনা।

হ্যাঁ করা যাবে। নিত্য ঘরোয়া পূজায় পুষ্পাদি না থাকিলে কেবল জল দিয়ে পূজা করিলেও পূজা সিদ্ধ হইবে।

না করা যাবেনা। উপনীত ব্রাহ্মণ পুরোহিত ছাড়া প্রতিমা বা শালগ্রাম দিয়ে পূজা করার অধিকার কারোর নাই। সাধারণ মানুষ দেব দেবীর পূজা পটে-ঘটে-ছোটো মূর্তিতে করতে পারবে।

সকল দেব দেবীর পূজোতেই ফুলের প্রয়োজন হয়। ফুল ছাড়া কোনো পূজা হয় না। দেবতাগণ সোনা মানিক্য দ্বারা খুশী হোন না, খুশী হোন কেবল ফুলের দ্বারা। তাই ফুল পূজায় অত্যাবশক।

মাটিতে যে ফুল পড়ে থাকে সেই ফুল দেবতাকে উৎসর্গ করা যায়না, চুরি করা ফুল দিয়ে পূজা করা যায়না। কেতকী ফুল দিয়ে কোনো পূজা করা যায়না।

How to do daily Durga Puja at home: নিত্য দুর্গাপূজা ঘরে করুন

daily durga puja

আমার বাড়িতে ছোট Durga Maa -এর প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহ আছে। যেখানে নিত্য পূজা (Daily Durga Puja at home) করা হয়। মায়ের নিত্য পূজায় ঘট স্থাপন করে বা না করেও করা যায়। যদি প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহ খুব ছোট হয়, যদি এক ফুটের কম হয় সেক্ষেত্রে ঘটের স্থাপন করার প্রয়োজন হয় না। 

কিন্তু যদি মাদূর্গার মূর্তি এক ফুটের বেশি হয় সেক্ষত্রে ঘট স্থাপন করে পূজা করা হয়। যেভাবে আমরা প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী ঘট পরিবর্তন করি সেই একইভাবে প্রতি মঙ্গলবার অথবা প্রতি অষ্টমী তিথিতে ঘট পরিবর্তন করতে হয়।

Table of Contents

Daily Durga Puja at home

আমার ঘরে গৃহ দেবতার আসনে অন্যান্য দেবদেবীদের সাথে মা দুর্গারও ছোট প্রতিষ্ঠিত মূর্তি আছে। বাড়িতে নিত্যপূজার অঙ্গরূপে অন্যান্য ঠাকুরদের সঙ্গেই খুব সহজ সরল পদ্ধতিতে মা দুর্গারও পূজা করা হয়ে থাকে। 

আমি এই নিবন্ধে উল্লেখ করবো কিভাবে খুব সহজ সরল পদ্ধতিতে মাদুর্গার নিত্য পূজা (Daily Durga Puja at home) করা যায়। এই পূজা মূর্তি অথবা ছবিতে করা যেতে পারে।

Daily Durga Puja at home: ঘরোয়া নিত্য দুর্গাপূজার উপকরণ

  • লাল জবার মালা, লাল জবা, অপরাজিতা ফুল,  লাল গোলাপ ফুল, অন্যান্য ফুল, সম্ভব হলে লাল পদ্ম।
  • বেলপাতা, গোলাপ জল, আতপ চাল, গঙ্গা জল অথবা পরিষ্কার টেপের জল।
  • ঘরে সব সময় লাল চন্দন রাখা দরকার, সিঁদুর, লাল বাতাসা (মা দূর্গার খুব প্রিয়), একটা মাটির প্রদীপ, ঘি। 

Daily Durga Puja at home

ঘরোয়া নিত্য
দুর্গাপূজার পক্রিয়া

Daily Durga Puja at home: নিত্য গৃহ পূজা শুরু

প্রতিদিনের নিত্য পূজায় দ্বারদেবতা পূজা, সূর্যাঘ্য, পঞ্চদেবতার পূজা করতে পারলে খুব ভালো। আর যদি সময়ের অভাবে এতো কিছু করা সম্ভব না হয় তাহলে শুধু আচমন, পুষ্পশুদ্ধি করেই পূজা শুরু করা যাবে।

Daily Durga Puja at home: স্নানভিষেক

গৃহ দেবতাকে (প্রতিষ্ঠিত গোপাল/ কৃষ্ণ/ বিষ্ণু দেবতা থাকে) আগে স্নানাভিষেক করে তারপর মা দূর্গাকে স্নানাভিষেক করতে হবে। নিত্য পূজায় পঞ্চামৃত দিয়ে স্নানাভিষেক করার প্রয়োজন হয়না। বিশেষ পুজোর দিনে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নানাভিষেক করা উচিৎ। 

পঞ্চামৃত স্নানাভিষেক সাধারণতঃ প্রতিষ্ঠিত ধাতব মূর্তির জন্য প্রযোজ্য।পঞ্চামৃত দিয়ে স্নানাভিষেক করার সময় “ওঁ দূর্গায় নমোঃ” মন্ত্র উচ্চারণ করে করতে হবে।

যদি মাটির মূর্তির থাকে সেক্ষত্রে জলশঙ্খ দিয়ে স্নানাভিষেক করতে হবে। 

জলশঙ্খ স্নানাভিষেকের পদ্ধতি: প্রথমে জলশঙ্খের মধ্যে সামান্য শুদ্ধ জল অথবা গঙ্গা জল অথবা পরিষ্কার টেপে জল নিয়ে তার মধ্যে লাল চন্দন ছিটিয়ে দিতে হবে। তারপর লাল চন্দন সহযোগে একটি লাল ফুল অথবা যেকোনো ফুল শঙ্খের উপর রেখে মাদূর্গার  সামনে ঘড়ির কাটার তিনবার ঘুরিয়ে একটি বাটিতে ঢেলে দিতে হবে।

এই জল পরে চরণামৃত হিসেবে নিয়ে বাকি জল একটি ফুল গাছের নিচে ঢেলে দিতে হবে নাহলে বেসিনের মধ্যে ঢেলে দিতে হবে।

ছবির স্নানাভিষেক পদ্ধতি: একটি পরিষ্কার কাপড়ে সামান্য গঙ্গাজল, কিছুটা অগরু, কিছুটা গোলাপ জল নিয়ে কাপড়টি দিয়ে মাদূর্গার ছবিটি/পটটি মুছে নিতে হবে।

Daily Durga Puja at home: শৃঙ্গার

স্নানাভিষেক পর্ব শেষ করে মা দুর্গা, মা লক্ষ্মী, মা সরস্বতী এবং সিদ্ধিদাতা গণেশের কপালে এবং চরণে সিঁদুরের ফোঁটা, লাল চন্দনের তিলক দিতে হবে। যদি আপনার প্রতিষ্ঠিত মাদূর্গার ছবিতে মা সপরিবার না থাকেন সেক্ষত্রে শুধু মাদূর্গার কপালে এবং চরণে সিঁদুরের ফোঁটা দিতে হবে। 

যেদিন মা দূর্গা প্রতিষ্ঠিত করবেন সেদিন মাকে অবশ্যই একটি শাখাপলা নোয়া নিবেদন করবেন। মা দুর্গার নিত্য পুজোয় মাকে নতুন করে প্রতিদিন আলতা, সিঁদুর, শাখাপলা নোয়া নিবেদন করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে মার বিশেষ পুজোয় একটি নতুন শাখাপলা নোয়া, আলতা, সিঁদুর, অবশ্যই দিতে হবে।

Daily Durga Puja at home: দীপ প্রজ্জ্বলন

মাদূর্গার মাটির ঘিয়ের প্রদীপ খুব প্রিয়। একটি ঘিয়ের প্রদীপের পাশে সম্ভব হলে একটি তিলের তেলের প্রদীপ আর ধূপদানি জ্বালিয়ে নিতে হবে।

দীপ প্রজ্জ্বলন

Daily Durga Puja at home: ভোগ নিবেদন

নিত্য ঘরোয়া মাদূর্গার পূজায় প্রসাদের সেরকম আড়ম্বরের প্রয়োজন নেই। ঘরে যা আছে তা দিয়ে মাকে নিত্য প্রসাদ দেওয়া যাবে। তবে লাল বাতাসা মাদূর্গার খুব প্রিয়, তাই ভোগে মাকে লাল বাতাসা  দিন। লাল চন্দন সহযোগে একটি লাল ফুল মায়ের ভোগের উপর দিয়ে দিন।

Daily Durga Puja at home: নারায়ণাদির অর্চনা

প্রতিটি  মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফুল নিয়ে গৃহদেবতার চরণে নিবেদন করতে হবে।

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ নারায়ণায় নমঃ (গৃহদেবতার চরণে নিবেদন করতে হবে)

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শ্রীগুরুবে নমঃ (গৃহদেবতার চরণে নিবেদন করতে হবে)

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ গণেশায় নমঃ (গৃহদেবতার চরণে নিবেদন করতে হবে)

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ দুর্গায়ৈ নমঃ (মাদূর্গার ছবিতে/মূর্তিতে নিবেদন করতে হবে)

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শিবায় নমঃ (মহাদেবের চরণে অথবা শিব লিঙ্গে নিবেদন করতে হবে)

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ লক্ষ্মীদেবই নমঃ (মাদূর্গার ছবিতে/মূর্তিতে নিবেদন করতে হবে)

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ স্বরস্বত্যৈ নমঃ (মাদূর্গার ছবিতে/মূর্তিতে নিবেদন করতে হবে)

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ কার্তিকেয় নমঃ (মাদূর্গার ছবিতে/মূর্তিতে নিবেদন করতে হবে)

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ সর্ব দেবদেবীভ্যনম নমঃ (মাদূর্গার ছবিতে/মূর্তিতে নিবেদন করতে হবে)

Daily Durga Puja at home: গুরু প্রণাম

মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফল নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত মন্ত্রে গৃহদেবতার চরণে নিবেদন করতে হবে।

অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তংযেন চরাচরম্।

তৎপদাং  দর্শিতাং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।

Daily Durga Puja at home: গণেশ পূজা

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে ভগবান গনেশের প্রণাম মন্ত্র:- “দেবেন্দ্র মৌলি-মান্দার-মকরন্দ-কণারুণাঃ। বিঘ্নং হরন্ত হেরম্ব-চরণাম্ব জ-রেণবঃ।।” উচ্চারণ করে মাদূর্গার চরণে নিবেদন করতে হবে।

Daily Durga Puja at home: পুষ্প নিবেদন

লালচন্দন সহযোগে ফুল, বেলপাতা এবং দুর্বা নিয়ে “এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ দূর্গায় নমঃ” মন্ত্র বলে মাদুর্গার চরণে নিবেদন করতে হবে। তারপর হাতজোড় করে “ওঁ দূর্গায়ৈ নমোঃ” বলে প্রণাম করতে হবে। লালচন্দন সহযোগে ফুল বেলপাতা এবং দুর্বা নিয়ে “ওঁ হ্রিং দূর্গে দুর্গে রক্ষণী স্বাহা” মন্ত্র বলে মাদুর্গার চরণে নিবেদন করতে হবে। হাতজোড় করে “ওঁ হ্রিং দূর্গায়ৈ নমোঃ” বলে প্রণাম করতে হবে।

Daily Durga Puja at home: প্রণাম মন্ত্র

হাতজোড় করে প্রণাম মন্ত্র বলে মাদূর্গাকে প্রণাম করতে হবে।

প্রণাম মন্ত্র:

সর্ব্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্ব্বার্থ সাধিকে।

শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তুতে।।

Daily Durga Puja at home: অষ্টোত্তর শতনাম

প্রণাম মন্ত্র পাঠ করে মাদূর্গার অষ্টোত্তর শতনাম পাঠ করে নিতে হবে। অষ্টোত্তর শতনাম পাঠে মাদূর্গা সন্তুষ্ট হোন অনেক। তাই নিত্য মাদুর্গার পূজা (Daily Durga Puja at home) সমাপ্ত করার আগে একবার এই অষ্টোত্তর শতনাম পাঠ অত্যন্ত মঙ্গলময়।

|| অষ্টোত্তর শতনাম ||

সর্ব্বশ্রেষ্ঠ দুর্গানাম জানিবে অন্তরে। ১ 

দুঃখহরা নাম মোর হয় তার পরে ॥২ 

আর নাম ধরি আমি কৃতান্তদমনী। ৩ 

অনেকে আমারে ডাকে নামে কাত্যায়নী ॥৪ 

ভবেশ-গৃহিণী হয় মোর এক নাম।৫ 

জগতজননী নাম খ্যাত সর্ব্বধাম॥৬ 

আর এর নাম মম হয় মহামায়া। ৭ 

আমারে জানিবে দোঁহে নামে কালজায়া ॥৮ 

ত্রিদিব-জননী নামে অনেকেই ডাকে। ৯ 

ভক্তগণ ডাকে বলি জয় মা কালীকে৷১০ 

করালিনী এক নাম জানিবে আমার। ১১ 

কপালমালিকা নাম খ্যাত ত্রিসংসার ।।১২ 

কালরাত্রি নাম মোর আগম-ভিতরে। ১৩ 

কৃপাময়ী নাম মোর সর্ব্বদুঃখ হরে ॥১৪

উমা নামে হিমালয়ে আমি বিরাজিতা। ১৫ 

মহোদরী নামে হই সর্ব্বত্র পূজিতা ॥১৬ 

অন্নপূর্ণা নামে করি অন্ন বিতরণ। ১৭ 

মাতঙ্গী নামেতে সবে করয়ে অর্চ্চন ॥১৮ 

সত্যসনাতনী নাম বিদিত ভুবনে। ১৯ 

ব্রহ্মাণ্ড-জননী নামে পূজে বহু জনে ॥ ২০ 

সর্ব্বত্র বিখ্যাত হই নামেতে শিবানী। ২১ 

আর নাম হয় মম জগত-তারিণী ॥২২ 

ইন্দ্রাণী নামেতে পূজে বহু বহু জন। ২৩ 

সর্ব্বাণী নামেতে আমি খ্যাত ত্রিভুবন ॥২৪ 

গণেশ-জননী নাম গণপতিপুরে। ২৫ 

রাজরাজেশ্বরী নাম খ্যাত চরাচরে ॥২৬ 

বগলা নামেতে পূজে বহু ভক্তগণ। ২৭ 

কমলা নামেতে করি মঙ্গল-সাধন ॥২৮ 

ভুবন ঈশ্বরী নাম সর্ব্বত্র প্রচার। ২৯ 

শুভঙ্করী নামে হয় শুভের সঞ্চার ॥৩০

ছিন্নমস্তা নামে আমি দানবে সংহারি। ৩১ 

মহিষমদ্দিনী নাম রণমাঝে ধরি ॥৩২ 

ষোড়শী নামেতে আমি সদা বিরাজিতা। ৩৩ 

আর এক নাম মম শ্রীঅপরাজিতা ॥৩৪ 

দৈত্যযুদ্ধমাঝে নাম ধরি উগ্রচণ্ডা। ৩৫ 

দুষ্টের দমনকালে নাম মোর চণ্ডা ॥৩৬ 

বিরিঞ্চিনন্দিনী নামে পাপ নাশ করি। ৩৭ 

শিব-সীমন্তিনী নামে শিবসহচরী ॥৩৮ 

মহেশঘরণী মোরে বলে ভক্তগণ। ৩৯ 

চন্দ্রচূড়া নামে করি চন্দ্রেরে ধারণ॥৪০ 

হররাণী নাম মোর হরের আদরে। ৪১ 

কামাখ্যা আমার নাম কোচবধূপুরে ॥৪২ 

এক নাম হয় মোর মৃগেশবাহিনী।৪৩ 

সর্ব্বত্র পূজিতা হই শ্যামা নামে আমি ॥৪৪ 

এলোকেশী নাম মম জগতে প্রচার।৪৫ 

শবাসনা নামে পূজা পাই সবাকার ॥৪৬

দিগম্বরী নাম করি আনন্দে ধারণ।৪৭ 

পতিতপাবনী নামে পতিতে তারণ॥৪৮ 

দক্ষরাজ ঘরে থাকি দাক্ষায়ণী নামে। ৪৯ 

শমনত্রাসিনী নামে শমন ভবনে ॥৫০ 

অরিষ্টনাশিনী নামে অরিষ্টরে নাশি। ৫১

 সুখদাত্রী নামে সদা সুখনীরে ভাসি ॥৫২

 দয়াময়ী নামে করি দয়া বিতরণ। ৫৩ 

নরকবারিণী নামে নরক-বারণ ॥৫৪ 

পৰ্ব্বত-তনয়া বলি আখ্যান পার্ব্বতী।৫৫ 

শাকম্ভরী নাম মম খ্যাত বসুমতী ॥৫৬ 

গুণের আধার বলি নাম গুণান্তিতা। ৫৭ 

জগতের মাতা তাই আখ্যান অম্বিকা ॥৫৮ 

বিমলা নামেতে করি চিত্তমল দূর ॥৫৯ 

অভয়া নামেতে রক্ষা করি সুরপুর ॥৬০ 

হরের ঘরণী বলি নাম ভবরাণী। ৬১ 

শঙ্কর-সুন্দরী নামে ভজি শূলপাণি ॥৬২

দানবদলনী নাম দানবে বধিয়া। ৬৩ 

মন্মথমথিনী নাম মদনে শাসিয়া ॥৬৪ 

অশিব-খণ্ডিকা নামে অশুভ বিনাশি। ৬৫ 

দানবসূদনী নামে দৈত্যগণে শাসি॥৬৬

মেনকা-দুলালী নাম রাখিলা মেনকা। ৬৭ 

বিজয়া নামেতে আমি অশিব-খণ্ডিকা ॥৬৮ 

গোপেশকুমারী নাম গোকুল নগরে। ৬৯ 

গোবিন্দ-ভগিনী নামে ছলিনু কংসেরে ॥৭০ 

যোগেশ-যোগিনী নাম যোগীর গোচর। ৭১ 

মৃগাঙ্ক-বদনী নাম শশাঙ্ক-নগর ॥৭২ 

গোমাতা নামেতে আমি রক্ষি গো গোধন। ৭৩ 

গান্ধারী নামেতে করি আর্তেরে পালন ॥৭৪ 

দক্ষযজ্ঞ ধ্বংসি নাম যজ্ঞবিনাশিনী।৭৫ 

হিমালয়ে জন্মি তাই গিরিশ-নন্দিনী ।।৭৬ 

নৃমুণ্ডমালিনী নাম নৃমুণ্ড ধরিয়া।৭৭ 

কপালিনী নাম ধরি আনন্দে মজিয়া ॥৭৮

শিবের প্রেয়সী বলি নাম শিবদারা।৭৯

কপালমালিকা নামে কালভয়হরা ॥৮০

কালরাত্রি নামে করি কালেরে দমন। ৮১

ত্রিদিব-জননী নামে রক্ষি সুরগণ ॥৮২

ভক্তিবিধায়িনী নামে ভক্তি দান করি।৮৩

সর্ব্বার্থসাধিনী নামে অনর্থ নিবারি ॥৮৪

লীলাবতী নামে করি লীলায় বিহার। ৮৫

চন্দ্রমুখী নাম খ্যাত বিশ্বের মাঝার ॥৮৬

অনুপমা নাম ধরি তন্ত্রের ভিতরে। ৮৭

সর্ব্বযোগেশ্বরী নাম যোগীর গোচরে ॥৮৮

কলুষনাশিনী নাম রাখে দেবঋষি। ৮৯

সখীগণপাশে আমি হই শ্যামা-শশী ॥৯০

বিকারবিহীনা মোরে বলে সিদ্ধগণ। ৯১

জলধি-নন্দিনী আমি জলধি-সদন ॥৯২

সত্যলোকে হই আমি সত্যস্বরূপিণী। ৯৩

আমিই কালের পাশে কাল-সীমন্তিনী ॥৯৪

বাঞ্ছা পূর্ণ করি বলি বাঞ্ছাদাত্রী নাম। ৯৫ 

গুণময়ী নাম মোর খ্যাত সৰ্ব্বধাম॥৯৬ 

অমলা নামেতে আমি খ্যাত চরাচরে। ৯৭ 

অজয়া নামেতে খ্যাত পাতাল নগরে ॥৯৮ 

অষ্টকলা নামে ডাকে ভুজঙ্গমগণ। ৯৯ 

তক্ষকেশী নাম মোর তক্ষক-সদন।১০০ 

কর্কোটক নাগ মোরে কর্কটেশী কয়। ১০১ 

ধনঞ্জয়েশ্বরী নাম কহে ধনঞ্জয়॥১০২ 

মহাপদ্ম নাগ ডাকে পদ্মেশ্বরী বলি। ১০৩ 

কুলীর-ঈশ্বরী বলি ডাকে মোরে কুলী ॥১০৪ 

শঙ্খেশ্বরী নাম রাখে শঙ্খ ভুজঙ্গম।১০৫ 

ডাকিনীদমনী কহে ডাকিনীর গণ৷১০৬ 

হাকিনীগণেরা কহে হাকিনী-ঈশ্বরী। ১০৭ 

ডামর তন্ত্রেতে নাম জানিবে ডামরী ॥১০৮ 

অষ্টোত্তর শতনাম করিনু কীৰ্ত্তন। 

জয়া বিজয়া এবে করিলে তো শ্রবণ।

|| ফলশ্রুতি ||

অষ্টোত্তর-শতনাম করিলে শ্রবণ। 

ভক্তিভরে কিম্বা যদি করে অধ্যয়ন ৷৷ 

শোক তাপ কভু নাহি থাকে তার ঘরে। 

রাজভয় ব্যাধিভয় চলি যায় দূরে ৷৷ 

দীর্ঘজীবী হয় ইহা করিলে শ্রবণ। 

অন্তকালে গতি তার অমর-ভবন ৷৷ 

শমন তাহার পাশে আসিতে না পারে।

ডঙ্কা মারি যায় চলি ভবপারাপারে ৷৷

তাই বলি ভক্তি করি শুন সর্ব্বজন।

দুর্গা দুর্গা বলি কর সফল জীবন৷৷

সমাপ্ত

Daily Durga Puja at home: আরোতি পর্ব

মাদূর্গার অষ্টোত্তর শতনাম পাঠ করে, আরতি  পর্ব শুরু করতে হবে।

প্রতিদিন পূজার শেষে, মাদূর্গার কাছে প্রণাম করে নিজের মনের বাসনা জানাতে হবে এবং মাকে পূজা গ্রহণ করার জন্য প্রার্থনা করতে হবে। পুজোর ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

aroti
Source: Belur Math

Daily Durga Puja at home: নিত্য ঘরোয়া দূর্গাপূজা সমাপ্ত

Bipodtarini Puja vidhi at home: ঘরে করুন বিপদতারিনী পূজা

Bipodtarini Puja vidhi at home

মা দূর্গার একশো আট অবতারের অন্যতম এবং দেবী সংকটনাসিনীর একটি রূপ হলেন বিপুদতারিণীমা।

ভক্তি মনে নিষ্ঠা ভরে এই বিপদতারিনী পূজা করলে যেকোনো বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় বলে মনে  করা হয়। খুব সহজেই ঘরে করুন এই বিপদতারিনী পূজা (Bipodtarini puja vidhi at home)।

বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতিবছর আষাঢ় মাসে এই বিপুদতারিণীমার পূজা হয়।

Table of Contents

Bipodtarini puja vidhi at home
Source: Rajpur Bipodtarini Temple

Bipodtarini Puja vidhi at home: ঘরোয়া পূজা পক্রিয়া

Bipodtarini Puja vidhi at home: ঘরোয়া পূজার উপকরণ

  • ঘট, আম পল্লভ, সিস্ ডাব, শাঁখা-পোলা, আলতা, সিঁদুর, পৈতে, গামছা, চাঁদমালা।
  • লাল কায়তন, দূর্বা, 13 -টা পান, 13 -টা সুপারি, 13 -টা এলাচী, 13 -টা লবঙ্গ, লাল বাতাসা, চাল,ডাল, আলু।
  • 13 রকমের ফল, মিষ্টি, দই, পঞ্চশস্য, লাল জবা ফুল, লাল পদ্ম ফুল, অপরাজিতা ফুল।
  • গঙ্গামাটি অথবা ফুল গাছের তলার মাটি, গঙ্গাজল না থাকলে পরিষ্কার টেপের জল।
উপকরণ

Bipodtarini Puja vidhi at home: আচমন পর্ব

পুজোতে বসার আগে নিজের মাথায় এবং পুজোর সব উপকরণে গঙ্গাজল ছিটিয়ে নিতে হবে। হাতে সামান্য গঙ্গা জল নিয়ে আচমন করে নিতে হবে। “নমঃ বিষ্ণু” মন্ত্র তিনবার বলে জল ওষ্টকণ্ঠে নিতে হবে। তারপর পরিষ্কার জলে হাত ধুয়ে নিয়ে হাত জোড় করে বিষ্ণুমন্ত্র স্মরণ করে নিতে হবে।

Bipodtarini Puja vidhi at home: পুষ্পশুদ্ধি

পূজার বেলপাতা, ফুল সবগুলোর উপর লাল চন্দন ছিটিয়ে দিতে হবে। পুজোর ফুলগুলিকে শুদ্ধ করে নিতে হবে পুষ্পশুদ্ধি মন্ত্র পড়ে।

পুষ্পশুদ্ধি

Bipodtarini Puja vidhi at home: আসন প্রতিষ্ঠা

এবার একটি কাঠের জলচৌকি নিতে হবে। জলচৌকির উপর একটি আল্পনা অঙ্কন করে নিতে হবে। আর তার উপর লাল রঙের কাপড় পাততে হবে। এই লাল রঙের কাপড়টির উপর গঙ্গাজল, গোলাপজল ছিটিয়ে সামান্য আতপ চাল, পঞ্চশস্য এবং ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে দিতে হবে।  

লাল রং মায়ের অত্যন্ত প্রিয়। এবার যদি মায়ের কোন পট থাকে সেটি জলচৌকির উপর বসিয়ে, সামনে মায়ের ঘট বসাতে হবে।

Bipodtarini Puja vidhi at home: দীপ প্রজ্বলন

ঘট  বসানোর পূর্বে ধূপ ও প্রদীপ জ্বালিয়ে নিতে হবে। প্রদীপটি দেশি ঘিয়ের প্রদীপ হলে আরো ভালো হয়। আর একটি তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালাতে পারলে আরো ভালো।

প্রদীপ

Bipodtarini Puja vidhi at home: ঘট স্থাপন

পুজোর ঘটে, সিস্ ডাবে নারায়ণ চিহ্ন অঙ্কন করতে হবে। সিস্ ডাব না থাকলে হরিতকি বেবহার করা যেতে পারে। আম্র পল্লবের প্রতিটি পাতার অগ্রভাগে এবং মধ্যভাগে সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে ঘটের মধ্যে রাখতে হবে। ঘটের সুপোরিতে সিঁদুর ফোঁটা দিতে হবে। আমপল্লভ পাঁচটি অথবা সাতটি অথবা নটি পাতাযুক্ত হতে হবে।

ঘটটি জলপূর্ণ করে, তার মধ্যে একটি সুপারি, একটি হলুদের গাঁট, দুর্বা, একটি এক টাকার কয়েন ও সামান্য আতপ চাল দিয়ে দিতে হবে। আম্র পল্লবে সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে ঘটের মধ্যে রাখতে হবে। 

লাল সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে একটি পান পাতা আমপল্লভের উপর রাখতে হবে। পান পাতার বোঁটার অংশটা ঘটের মঙ্গল চিহ্ন দিকে করে রাখতে হবে।

সিস্ ডাবের উপর গামছা, সিদ্ধিদাতা গণেশের উদ্দেশ্যে একটা পৈতে, শাঁখা-পোলা, চাঁদমালা, লাল চন্দন সহযোগে লাল জবার মালা, আর কিছু ফুল, তিনটি দুর্বা তিনটি  বেলপাতা দিতে হবে।

সবশেষে গঙ্গামাটি আর গঙ্গা জল দিয়ে একটি ময়াম বানিয়ে তার উপর সিঁদুর ফোটা, পঞ্চশস্য, আতপ চাল, ফুলের পাঁপড়ি, দূর্বা দিতে হবে। তারপর ঘটটি উলো ধ্বনি দিয়ে মায়ের সামনে স্থাপন করতে হবে। 

ঘট স্থাপন

Bipodtarini Puja vidhi at home: পূজা শুরু

|| নারায়ণাদির অর্চনা ||

প্রতিটি  মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফুল নিয়ে ঘটের উপর নিবেদন করতে হবে।

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ নারায়ণায় নমঃ 

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শ্রীগুরুবে নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ গণেশায় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ দুর্গায়ৈ নমঃ

নমঃ বিপত্তারিণী দুর্গায় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শিবায় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ লক্ষ্মীদেবই নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ স্বরস্বত্যৈ নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ কার্তিকেয় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ সর্ব দেবদেবীভ্যনম নমঃ

|| গুরু প্রণাম ||

মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফল নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত মন্ত্রে ঘটের উপর নিবেদন করতে হবে।

অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তংযেন চরাচরম্।

তৎপদাং  দর্শিতাং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।

|| ঘণ্টা পূজা ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্র উচ্চারণ করে পূজার ঘন্টার উপর ছিটিয়ে দিতে হবে।

ঘণ্টা পূজা মন্ত্র :ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে জয়ধ্বনি- মন্ত্র-মাতঃ স্বাহা।

|| গণেশ পূজা ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে ভগবান গনেশের প্রণাম মন্ত্র:- “ও বক্রতুণ্ড মহাকায় সূর্য্যকোটি সমপ্রভ। নির্বিঘ্নং কুরু মে দেব সৰ্ব্বকার্য্যেযু সর্ব্বদা।” উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে।

|| ধাগা নিবেদন ||

মা বিপত্তারণীর পুজোয় তেরো সংখ্যাটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। মাকে তেরো রকম ফুল দিয়ে এদিন পুষ্পাঞ্জলি দিলে মা অত্যন্ত প্রসন্ন হন। বিপত্তারণী মায়ের পুজোয় লাল ধাগা বাঁধার প্রথা রয়েছে। 

প্রথমেই লাল সুতো তেরোবার পাক দিয়ে মাঝখানে তেরোটি দুরবা দিয়ে একটি গিট দিতে হবে। এবার দুই পাশে ছটি ছটি করে গিট দিয়ে এই ধাগাটি প্রস্তুত করা হয়। এবার এই ধাগা বাড়ির যতজন সদস্য আছেন সবার জন্য বানিয়ে নিয়ে সেই ধাগা মায়ের কাছে পুজোর সময় দিয়ে রাখতে হবে।

পুজোর শেষে এই লাল ধাগা ছেলেরা ডান হাতে এবং মহিলাদের বাম হাতে বাঁধতে হয়। বিশ্বাস করা হয় এই পবিত্র ধাগা সমস্ত বিপদ থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে। যদি এই ধাগা বাড়িতে বানানো সম্ভব না হয় তাহলে যেকোনো ফুলের দোকানে এই ধাগা পাওয়া যায়। 

|| আলতা সিঁদুর নিবেদন ||

এবার মাকে শাঁখা ও নোয়া ও আলতা সিঁদুর নিবেদন করতে হবে। মাকে তেল সিঁদুরের ফোঁটা দিতে হবে। একটি থালায় তেরোটি পান ও তেরোটি সুপারি দিয়ে মাকে নিবেদন করতে হবে। একইসঙ্গে মাকে তেরো রকম ফল ও তেরো রকমের মিষ্টি নিবেদন করতে হবে।

|| বিপদতারিণী পুষ্পাঞ্জলি ||

লাল চন্দন সহযোগে হাতে ফুল, বেলপাতা, দূর্বা নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্র উচ্চারণ করে তিনবার ঘটের উপর নিবেদন করতে হবে। 

বিপত্তারিণীদুর্গে ত্বং সর্বাশুভনিবারিণী। আয়ুরারোগ্যং দেহি মে মাহেশ্বরি প্রসীদ মে।। সর্বদুঃখহরা দেবী সর্বসন্তাপনাশিনী। আয়ুরারোেগ্যং বিজয়ং দেহি দেবি নমোহস্তুতে।। রোগশোকহরা দেবী সর্বসঙ্কটনাশিনী। সর্বস্যার্তিহরে দেবি প্রণমামি পুনঃ পুনঃ।। এষ সচন্দন-পুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলিঃ নমঃ দক্ষযজ্ঞ বিনাশিন্যে মহাঘোরায়ৈ যোগিনী কোটিপরিবৃতায়ৈ ভদ্রকালৈ ভগবতৈ দুর্গায়ৈ নমঃ।।

|| আরতি পর্ব ||

সাধারণ নিত্য পুজোয় যা যা দিয়ে আরতি করা হয় অর্থাৎ ধূপকাঠি, তেলের প্রদীপ, ঘিয়ের প্রদীপ, কর্পূর এবং সুগন্ধি ধুনো দিয়ে বিপদতারিনী মাকে আরতি করতে হবে। নিত্যপূজার ক্ষেত্রে এই পাঁচটি জিনিস দিয়েই প্রত্যেকদিন আরতি করা ভালো।

|| বিপদতারিণী ব্রতকথা পাঠ ||

যে স্ত্রীলোক বিপদতারিণী ব্রতকথা পাঠ  করে সে সব বিপদ থেকে উদ্ধার পায়।

বিপদতারিণী ব্রতকথা

ব্রতের নিয়ম:- আষাঢ় মাসের শুক্লা তৃতীয়া থেকে নবমী তিথির ভেতর যে-কোনো শনি বা মঙ্গলবারে এই ব্রত করতে হয়। ঘটস্থাপন করে তাতে আম্রপল্লব দিয়ে এই পুজো করতে হয়।

ব্রতের ফল:- এই ব্রত করলে সংসারের সকল বিপদ কেটে যায়।

ব্রতকথা:- ব্রতকথা-বিদর্ভ দেশে এক রাজা ছিলেন। তাঁর রানী অতিশয় ভক্তিমতী ও বন্ধুবৎসল। তিনি নিষ্ঠা সহকারে বিপত্তারিণীর ব্রত করতেন। এক মুচিনীর সঙ্গে তার খুব সখ্য হয়েছিল। মুচিনীকে তিনি প্রায়ই নানা ফলমূল ও খাদ্যদ্রব্য উপহার দিতেন। মুচিনী গরিব, তবু তার বড় ইচ্ছা রানীকে কিছু দেয়। রানী রোজই বলেন, যে একদিন তোমার কাছ থেকে চেয়ে নেব। কিন্তু চাওয়া আর হয় না। 

একদিন রানী বললেন, তোমরা তো গোমাংস রান্না করো, একদিন তাই একটু নিয়ে এসো আমার জন্যে, দেখব কী রকম। মুচিনী তো আহ্লাদে আটখানা। পরম যত্নে সে গোমাংস রাঁধল। তারপরে কাপড় চাপা দিয়ে তা রাজবাড়িতে নিয়ে এসে রানীর হাতে দিল। রানী সযত্নে তা তুলে রাখলেন। খাবেন না কখনোই, দেখবেন শুধু। মুচিনী গোপনে গোমাংস দিয়ে গেছে বটে, কিন্তু রাজবাড়ির একটি চাকর তা দেখেছে। 

সেই চাকরটি রাজাকে সব বলে দিতেই রাজা রানীর কাছে ছুটে এসে জানতে চাইলেন, মুচিনী কী রেখে গেছে। যদি আপত্তিকর কিছু সে রেখে গিয়ে থাকে তাহলে রানীর গর্দান যাবে। রানী বিপদে পড়লেন। তিনি একমনে ডেকে চললেন মা-দুর্গা বিপত্তারিণীকে। মা-দুর্গা তাকে কানে কানে বললেন, দেখগে সব ফুল হয়ে আছে। রানী তখন রাজাকে এনে দেখালেন সেই ফুল। রাজা চাকরকে তিরস্কার করলেন। বিপত্তারিণী মা দুর্গার দয়ায় এইভাবে রানীর বিপদ কেটে গেল। সেই থেকে এই ব্রতের কথা সর্বত্র প্রচার হয়ে গেল।

বিপত্তারিণী ব্রতকথা সমাপ্ত

বিপদতারিনী মার কাছে প্রণাম করে নিজের মনস্কামনা নিবেদন করে নিতে হবে এবং পুজোয় কোন ত্রুটি হয়ে গেলে তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

বিপদতারিনী পূজা সমাপ্ত

How to do Laxmi Puja at home: সহজেই লক্ষ্মী পূজা করুন ঘরে

Laxmi Puja at home

ত্রিলোকের সকল সৌভাগ্য শ্রী এবং ঐশ্বর্যের অধিষ্ঠাত্রী হলেন দেবী লক্ষ্মী। দেবী লক্ষ্মী হলেন সৌভাগ্য এবং শান্তির প্রতীক। দুর্গোৎসবের পর আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মীর (Laxmi Puja at home) আরাধনা করা হয়।

যে কোনো পূর্ণিমা তিথিতেই মা লক্ষ্মীর পুজো করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। তবে কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মীপুজোর মাহাত্ম্য সর্বাধিক।

বাঙালির প্রতিটি ঘরে এই দিন কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো (Laxmi Puja at home) করা হয়। কথিত আছে কোজাগরির লক্ষ্মী পুজোর (Laxmi Puja at home) দিনে দেবী স্বর্গ থেকে মর্তে অবতরণ করেন।

Table of Contents

Laxmi Puja at home

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার (Laxmi Puja at home) পদ্ধতি

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার (Laxmi Puja at home) উপকরণ

  • পঞ্চশস্য, হরীতকী, আতপ চাল, তিল, সিস্ ডাব, অগরু, লক্ষ্মী কড়ি, কপুরের গুঁড়ো।
  • ঘি, দুই, মধু, চিনি, পান, লাল পদ্মফুল, লাল জবার মালা, লাল গুলাপি, লাল গোলাপফুল, বেলপাতা।
  • ছোট গামছা, চাঁদমালা, দুই জোড়া শাখা পলা নোয়া (একজোড়া ঘটের জন্যে আর আরেক জোড়া মাকে নিবেদন করার জন্য), দুটো একটি আলতা, সিঁদুরের কৌটো, গঙ্গা মাটি, হলুদের গাঁট, গোটা সুপারি।
  • গঙ্গামাটি অথবা ফুল গাছের তলার মাটি, গঙ্গাজল না থাকলে পরিষ্কার টেপের জল।

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার আচমন পর্ব

পুজোতে (Laxmi Puja at home) বসার আগে নিজের মাথায় এবং পুজোর সব উপকরণে গঙ্গাজল ছিটিয়ে নিতে হবে। হাতে সামান্য গঙ্গা জল নিয়ে আচমন করে নিতে হবে। পরিষ্কার জলে হাত ধুয়ে নিয়ে হাত জোড় করে বিষ্ণু স্মরণ করে আচমন পর্ব সম্পন্ন করতে হবে।

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার পুষ্পশুদ্ধিকরণ

লাল গোলাপ মা লক্ষ্মীর অত্যন্ত প্রিয়। তাই কোজাগরী লক্ষ্মীপূজোর (Laxmi Puja at home) দিন অবশ্যই অন্তত একটা লাল গোলাপ মাকে নিবেদন করা যেতে পারে।

পূজার বেলপাতা, দূর্বা, ফুল সবগুলোর উপর চন্দন ছিটিয়ে দিতে হবে। পুজোর ফুলগুলিকে শুদ্ধ করে নিতে হবে পুষ্পশুদ্ধি মন্ত্র  পড়ে।

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার আসন প্রতিষ্ঠা

প্রথমে মেঝেতে আল্পনা অঙ্কন করে নিতে হবে। মালক্ষ্মীকে যেখানে বসাবেন সেখানে একটা আল্পনা অঙ্কন করতে হবে। যদি ঘরে প্রতিষ্ঠিত মালক্ষ্মী থাকে তাহলেও ঘরের মেঝেতে আসনের সামনে এবং ঘরের প্রবেশ দরজার সামনে, ঠাকুর ঘরের দরজার সামনে আলপনা অঙ্কন করে নিতে হবে। 

আর যদি আলাদা ভাবে মালক্ষ্মীর পূজা (Laxmi Puja at home) করতে হয় তাহলে একটি পরিষ্কার কাঠের জলচোকির বা পিঁড়ির  ওপর গঙ্গাজল ছিটিয়ে একটি লাল কাপড় বিছিয়ে নিতে হবে। 

এই কাপড়ের ওপর কিছুটা গঙ্গাজল, আতপ চাল, পঞ্চশস্য এবং ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে নিতে হবে। তারপর আসনের ওপর মালক্ষ্মীর ছবি অথবা মূর্তি স্থাপন করতে হবে।

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার স্নানাভিষেক

মাটির মূর্তিতে পুজো করলে পঞ্চামৃত দিয়ে অভিষেক করানো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে জলশঙ্খে গঙ্গাজল লাল চন্দন বেটে ছিটিয়ে দিতে হবে সেই গঙ্গাজলের মধ্যে তারপর সেই শঙ্খের গঙ্গাজলে লাল চন্দন সহযোগে একটি ফুল দিয়ে মালক্ষ্মী প্রতিমার সামনে তিনবার ঘড়ির কাটার মতো গড়িয়ে সেই জল একটি বাটিতে ঠেলে নিতে হবে।  পরে ওই জল কোনো ফুল গাছের নিচে অথবা জলাশয়ে ফেলে দিতে হবে 

মালক্ষ্মীর ছবির ক্ষেত্রে একটা পরিষ্কার শুকনো সুতির কাপড় নিতে হবে। কাপড়ের ওপর কিছুটা গঙ্গাজল দিয়ে সামান্য অগরু আর কিছুটা গোলাপ জল দিয়ে মা লক্ষ্মীকে এবং মায়ের বাহনকে সুন্দর করে মুছে নিতে হবে।

আর মালক্ষ্মীর পিতলের মূর্তিতে পুজো করলে সেক্ষেত্রে পঞ্চামৃত এবং সুগন্ধি জল দিয়ে মায়ের অভিষেক করিয়ে নেওয়া যাবে।

**পঞ্চামৃত তৈরী করার পক্রিয়া:-  একটি ঘটে একটু গঙ্গা জল, একটু দই , একটু ঘি, মধু এবং চিনি দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রনে একটু অগরু এবং কিছু ফুলের পাঁপড়ি দিতে হবে। লাল চন্দন বেঁটে একটু ছিটিয়ে দিতে হবে।

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার সিঙ্গার করা

সিঙ্গার করা

মালক্ষ্মীর কপালে সিঁদুরের ফোঁটা দিতে হবে। লাল চন্দনের তিলক মায়ের কপালে এবং চরণে দিতে হবে, একই সঙ্গে মায়ের বাহন পেঁচার কপালে এবং চরণে লাল চন্দনের তিলক দিয়ে দিতে হবে।

মায়ের এক পাশে আমি রেখেছি জল শঙ্খ এবং আরেক পাশে ধানের ছড়া আর সিঁদুরের কৌটো রাখতে হবে।

লক্ষ্মী পাঁচালি ও ব্রতকথা বই দুটো মালক্ষ্মীর পাশে রাখতে হবে। মাকে এই বিশেষ দিনে আপনি চাইলে একটি নতুন শাড়ী, একটা নতুন আলতা আর নতুন সিঁদুর নিবেদন করলে ভালো। 

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার দীপ ধুপ জ্বালানো

মালক্ষ্মীর পুজো (Laxmi Puja at home) শুরু করার আগে একটি তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালিয়ে নিতে হবে। মালক্ষ্মীর তিলের তেলের প্রদীপ খুব প্রিয়। এটা বিশ্বাস করা হয় তিলের তেলের প্রদীপ ঘরে প্রজ্বলন করলে শান্তি এবং সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। সাধারণ পূজাতেও তিলের তেল জ্বালানো যায়। প্রদীপের পাশাপাশি দধূপকাঠি, ধুপ জ্বালিয়ে নিতে হবে। ঘি এর প্রদীপ ও জ্বালানো যেতে পারে এই বিশেষ পুজোর দিনে। 

দীপ ধুপ জ্বালানো

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার (Laxmi Puja at home) ঘট প্রতিষ্ঠা

প্রথম স্তর

পুজোর (Laxmi Puja at home) ঘটে, সিস্ ডাবে তেল সিঁদুর দিয়ে সস্তিক চিহ্ন অঙ্কন করতে হবে। আম্র পল্লবের প্রতিটি পাতার অগ্রভাগে এবং মধ্যভাগে সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে ঘটের মধ্যে রাখতে হবে। আমপল্লভ পাঁচটি অথবা সাতটি অথবা নটি পাতাযুক্ত হতে হবে।

ঘটটি জলপূর্ণ করে, ঘটে সামান্য গোলাপ জল, একটি হরিতকী, একটা হলুদের গাঁট, একটা গোটা সুপারি, তিনটি দূর্বা, একটি এক টাকার কয়েন বা একটি লক্ষ্মী কড়ি এবং একটু আতপ চাল দিয়ে দিতে হবে।

দ্বিতীয় স্তর

পাঁচটি বা সাতটি বা নটি পাতাসহ একটা আমপল্লব আমি ঘটের ওপর রাখতে হবে। লাল সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে একটি পান পাতা আমপল্লভের উপর রাখতে হবে। পান পাতারের বোঁটার অংশটা এই ঘটের সস্তিক চিহ্ন বরাবর রাখতে হবে। পান পাতার উপর সিস্ ডাব রাখতে হবে। 

সিস্ ডাবের উপর গামছা, সিদ্ধিদাতা গণেশের উদ্দেশ্যে একটি  পৈতে, শাঁখা-পোলা, চাঁদমালা, লাল চন্দন সহযোগে লাল জবার মালা, আর কিছু ফুল, একটি লাল পদ্মফুল এবং তিনটি দুর্বা তিনটি  বেলপাতা দিতে হবে।

(সিস্ ডাবের পরিবর্তে কলা, গোটা হরিতকী বা গোটা সুপারি দিয়েও মা লক্ষ্মীর ঘর স্থাপন করা যায়।)

গঙ্গামাটি গোলাপ জল আর গঙ্গা জল দিয়ে ভিজিয়ে একটি ময়াম বানিয়ে তার উপর সিঁদুর ফোটা, পঞ্চশস্য, আতপ চাল, কিছুটা ধান, ফুলের পাঁপড়ি, দূর্বা দিতে হবে। তারপর ঘটটি শঙ্খধ্বনি এবং উলুধ্বনি দিয়ে স্থাপন করতে হবে। 

মার পূজার (Laxmi Puja at home) ঘটের সামনে একটি কাঁসার ছোট বাটি রাখতে হবে। তার মধ্যে অর্ঘ্য প্রদান করতে হবে।

mongol ghot

ঘরোয়া লক্ষ্মী পূজা (Laxmi Puja at home) শুরু

|| নারায়ণাদির অর্চনা ||

এই প্রক্রিয়াটি বিশদভাবে ঘরোয়া পূজার সাধারণ নিয়মে উল্লেখ করা হয়েছে। 

|| গুরু প্রণাম ||

মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফল নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত মন্ত্রে ঘটের উপর নিবেদন করতে হবে।

অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তংযেন চরাচরম্।

তৎপদাং  দর্শিতাং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।

|| গনেশ পূজা ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে ভগবান গনেশের প্রণাম মন্ত্র:- “ও বক্রতুণ্ড মহাকায় সূর্য্যকোটি সমপ্রভ। নির্বিঘ্নং কুরু মে দেব সৰ্ব্বকার্য্যেযু সর্ব্বদা।” 

উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে।

|| মা লক্ষ্মীর ধ্যান মন্ত্র ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে

ধ্যানমন্ত্র:- বালার্ক দ্যুতিমিন্দুখণ্ড বিলসৎসকোটীর হারোজ্জ্বলাং রত্নাকল্পবিভূষিতাং কুচনতাং শালেঃ করে মঞ্জরীম্। পদ্মং কৌস্তুভ-রত্নমপ্যবিরতং সংবিভ্রতীং সস্মিতাং ফুল্লান্তোজবিলোচনত্রয়যুতাং ধ্যায়েৎ পরামম্বিকাম্।।” 

উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে।

|| মা লক্ষ্মীর পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন ||

হাতে কিছু লাল চন্দন সহযোগে ফুল, বেলপাতা, দূর্বা নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্র উচ্চারণ করে ঘটে উপর তিনবার নিবেদন করতে হবে।

পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র:-

“নমস্তে সর্বদেবানাং বরদাসী হরিপ্রিয়ে যা গতিস্তত প্রপ নানাং

সামে ভয় দর্চনা এস সচন্দন গন্ধপুষ্প

বিল্যপত্রাঞ্জলি নমঃ শ্রীলক্ষ্মী দেব্যৈ নমঃ”

|| মা লক্ষ্মীর প্রণাম মন্ত্র ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে ভগবান 

প্রণামমন্ত্র:- “ওঁ (নমো) বিশ্বরূপস্য ভার্য্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে। সৰ্ব্বতঃ পাহি মাং দেবি মহালক্ষ্মী নমোহস্তুতে।।” 

উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে।

|| মা লক্ষ্মীর প্রার্থনা মন্ত্র ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে ভগবান 

প্রার্থনা মন্ত্র:-

“লক্ষ্মীস্তং সর্বদেবানং যথাসম্ভব নিত্যস স্থিরাভাব তথা

দেবী মম জন্মী জন্মী, বন্দে বিষ্ণুপ্রিয়াং দেবী

দারিদ্র্য দুঃখ নাসিনী ক্ষীরোদ সম্ভবাং দেবীং বিষ্ণুবক্ষ বিলাসিনী”

উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে।

|| মা লক্ষ্মীর দ্বাদশ নাম স্তোত্র ||

Laxmi puja at home

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে ভগবান 

স্তোত্র:-

ও ত্রৈলোক্য পুজিতে দেবী কমলে বিষ্ণু বল্লভে যথা তং সুস্থিরা কৃষ্ণে তথাভবময় স্থিরা।

ঈশ্বরী কমলা লক্ষ্মীশ্চলা ভূর্তি হরিপ্রিয়া পদ্মা পদ্মালয়া সম্পদপ্রদা শ্রীপদ্মধারিণী।

দ্বাদশ শৈতান নামানি লক্ষ্মী সংপূজ্য জঃ পটে স্থিরা লক্ষ্মীর ভবে

তস্য পুত্র দ্বারা দিভিসহ।

উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে।

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজার আরতি পর্ব

সাধারণ নিত্য পুজোয় যা যা দিয়ে আরতি করা হয় অর্থাৎ ধূপকাঠি, তেলের প্রদীপ, ঘিয়ের প্রদীপ, কর্পূর এবং সুগন্ধি ধুনো দিয়ে মালক্ষ্মীকে (Laxmi Puja at home) আরতি করতে হবে।

মালক্ষ্মীর কাছে প্রণাম করে নিজের মনস্কামনা নিবেদন করে নিতে হবে এবং পুজোয় কোন ত্রুটি হয়ে গেলে তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

ঘরোয়া লক্ষ্মীপূজা (Laxmi Puja at home) সমাপ্ত

FAQs:-

লক্ষ্মীর ঘট স্থাপন মন্ত্র

ঘট স্থাপন মন্ত্র পূজা বিশেষে আলাদা হয়না। একই মন্ত্রে ঘট স্থাপন করে যেকোনো পূজা সম্পন্ন করা যায়। ঘট স্থাপন করার মন্ত্র এইরূপ- ওঁ সর্বতীর্থোদ্ভবং বারি সর্বদেবসম্বন্বিতম। ইমং ঘটং সমারুহ্য তিষ্ট দেবি গনৈঃ সহ।

আবার ঘট স্পর্শ করিয়া তিনবার এই মন্ত্র বলতে হবে- ওঁ স্থাং স্থীং স্থিরৌ ভব, তারপর আবার তিনবার এই মন্ত্র বলতে হবে-  ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ তৎ সবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ॥ তারপর হাতজোড় করে প্রণাম করতে হবে।

আচমন অথবা শুদ্ধি করণের করার আরেক নাম বিষ্ণু স্মরণ। বিষ্ণু স্মরণ মন্ত্র  বিশদে উল্লেখ করা আছে আমাদের ঘরোয়া পূজার সাধারণ নিয়ম পেইজটিতে। বিষ্ণু স্মরণ পক্রিয়া থেকে মন্ত্র সব কিছু উল্লেখ আছে।

How to do Annapurna Puja at home: সরল পদ্ধতিতে করুন অন্নপূর্ণা পূজা ঘরে

annapurna puja at home

হিন্দু পুরাণ মতে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে অন্নপূর্ণা দেবীর পূজা হয়ে থাকে।এই তিথিতে মা অন্নপূর্ণার বিশেষ পুজো (Annapurna Puja at home) আরাধনা করুন আপনার ঘরে। অন্নপূর্ণা দেবী অন্ন প্রদান করেন এবং তিনি সকলের দুঃখকষ্ট নিবারণ করেন।

মা অন্নপূর্ণা হলেন দ্বিভুজা, তার এক হাতে অন্ন এবং অন্য হাতে হাতা। দেবী পার্বতীরই এক রূপ হলেন দেবী অন্নপূর্ণা। ক্ষুধার্থ এবং ভিক্ষারত মহাদেবকে অন্ন প্রদান করে দেবী পার্বতী দেবী অন্নপূর্ণার নাম পেয়েছিলেন।

Table of Contents

মনে করা হয় যে গৃহে দেবী অন্নপূর্ণার পুজো করা হয় সেই গৃহে কখনও অন্নাভাব হয় না। বাংলায় অন্নপূর্ণা পুজো শুরু করেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের পূর্বজ ভবানন্দ মজুমদার। আবার অনেকে বলেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের হাত ধরেই বাংলায় অন্নপূর্ণা পুজোর সূচনা হয়।

ঘরোয়া অন্নপূর্ণাপূজার (Annapurna Puja at home) পদ্ধতি

Annapurna Puja at home

ঘরোয়া অন্নপূর্ণাপূজার উপকরণ

  • চাঁদমালা, দুটো পৈতে, সিদ্ধি, আতপ চাল, সিঁদুর, মধু, পঞ্চশস্য, ঘি, দুধ, চারটি সুপোরি, দুটো পান, গঙ্গামাটি অথবা ফুল গাছের তলার মাটি, গঙ্গাজল না থাকলে পরিষ্কার টেপের জল। ।
  • মুগডাল, আলু, পটল, বেগুন, কুমড়ো।
  • ঘট, গামছা, সিস্ ডাব, দুই জোড়া শাঁখা-পোলা, আলতা, শাড়ি, লাল রঙের ওড়না।
  • মিষ্টি, চিড়ে, বাতাসা, নাড়ু।
  • আম পল্লভ, লাল জবার মালা, লাল পদ্ম ফুল, বেল ফুলের মালা, অন্য ফুল, বেলপাতা।

অন্নপূর্ণা পূজার আচমন পর্ব

পুজোতে বসার আগে নিজের মাথায় এবং পুজোর সব উপকরণে গঙ্গাজল ছিটিয়ে নিতে হবে। হাতে সামান্য গঙ্গা জল নিয়ে আচমন করে নিতে হবে।

বিষ্ণুমন্ত্র:-

ওঁ তদবিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি স্বরয়ঃ। 

দিবীব চক্ষুরাততম্ !!

ওঁ অপীবত্র: পবিত্রো বা সর্বাবস্থ্যাং গতোহপি বা। 

যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরশুচীঃ ।।

একটা পাত্রে গঙ্গা জলের সঙ্গে লাল চন্দন, অগরু আর কপুরের গুঁড়ো মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। এটা পুজোর ফুল,বেলপাতা, দুর্বা, মালা ইত্যাদির ওপর ছিটিয়ে দিতে হবে।

অন্নপূর্ণা পূজার পুষ্পশুদ্ধি

পুষ্পপাত্রে পুষ্পগুলি স্পর্শ করে পুষ্পশুদ্ধি করতে হবে।

অন্নপূর্ণা পূজার আসন প্রতিষ্ঠা

প্রথমে মেঝেতে আল্পনা অঙ্কন করে নিতে হবে। অন্নপূর্ণামাকে যেখানে বসাবেন সেখানে একটা আল্পনা অঙ্কন করতে হবে।

একটি পরিষ্কার কাঠের জলচোকির  ওপর গঙ্গাজল ছিটিয়ে একটি লাল কাপড় বিছিয়ে নিতে হবে। এই কাপড়ের ওপর কিছুটা গঙ্গাজল, আতপ চাল এবং ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে নিতে হবে । তারপর আসনের ওপর অন্নপূর্ণামার ছবি অথবা মূর্তি স্থাপন করতে হবে

অন্নপূর্ণা পূজার দীপ ধুপ জ্বালানো

পুজো শুরু করার আগে একটি ঘিয়ের প্রদীপ এবং তিনটি ধূপকাঠি ধরিয়ে নিতে হবে। অন্নপূর্ণামা যেহুতু মা দুর্গার একটি অন্য রূপ। মাদুর্গার মাটির প্রদীপ খুব প্রিয়, তাই পুজো শুরু করার আগে একটি ঘি দিয়ে মাটির প্রদীপ জ্বালালে মা খুব প্রসন্ন হন।

puja deep

অন্নপূর্ণা পূজার স্নানাভিষেক

একটি পরিষ্কার সুতির কাপড়ে সামান্য গঙ্গাজল, সামান্য গোলাপজল এবং কিছুটা অগরু নিয়ে অন্নপূর্ণামার ছবিটি সুন্দর করে মুছে নিতে হবে। আর যদি ঘরে প্রতিষ্ঠিত মূর্তি থাকে তাহলেও একই ভাবে মাকে স্নানাভিষেক করা যাবে। সেই মূর্তি যদি মাটির হয় সেক্ষেত্রে জলশঙ্খের মধ্যে গঙ্গা জল, গোলাপ জল, অগরু, কিছু ফুলের পাঁপড়ি দিয়ে মায়ের মূর্তির সামনে আরতি করার মতো করে ঘোরাতে হবে তিনবার। 

অন্নপূর্ণা মাকে সিঙ্গার করা

স্নানাভিষেকের পর অন্নপূর্ণামাকে লাল চন্দনের তিলক, সিঁদুরের ফোটা দিতে হবে। শিবঠাকুরকে সাদা চন্দনের তিলক পরিয়ে দিতে হবে। একটি লাল রঙের ওড়না মার ছবির উপর দিয়ে দিতে হবে। একটি চাঁদমালা একইভাবে মার ছবির উপর দিয়ে দিতে হবে। মহাদেবের উদ্দেশ্যে একটি পৈতে নিবেদন করতে হবে। 

ঘট প্রতিস্থাপন

পুজোর ঘটে, সিস্ ডাবে নারায়ণ চিহ্ন অঙ্কন করতে হবে। আম্র পল্লবের প্রতিটি পাতার অগ্রভাগে এবং মধ্যভাগে সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে ঘটের মধ্যে রাখতে হবে। ঘটের সুপোরিতে সিঁদুর ফোঁটা দিতে হবে। আমপল্লভ পাঁচটি অথবা সাতটি অথবা নটি পাতাযুক্ত হতে হবে।

ঘটটি জলপূর্ণ করে, তার মধ্যে একটি সুপারি, একটি হলুদের গাঁট, দুর্বা, একটি এক টাকার কয়েন ও সামান্য আতপ চাল দিয়ে দিতে হবে। আম্র পল্লবের প্রতিটি পাতার অগ্রভাগে এবং মধ্যভাগে সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে ঘটের মধ্যে রাখতে হবে। 

লাল সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে একটি পান পাতা আমপল্লভের উপর রাখতে হবে। পান পাতার বোঁটার অংশটা এই ঘটের মঙ্গল চিহ্ন বরাবর রাখতে হবে।

সিস্ ডাবের উপর গামছা, একটা পৈতে, শাঁখা-পোলা, চাঁদমালা, লাল চন্দন সহযোগে লাল জবার মালা, আর কিছু ফুল, তিনটি দুর্বা তিনটি  বেলপাতা দিতে হবে।

সবশেষে গঙ্গামাটি আর গঙ্গা জল দিয়ে একটি ময়াম বানিয়ে তার উপর সিঁদুর ফোটা, পঞ্চশস্য, আতপ চাল, ফুলের পাঁপড়ি, দূর্বা দিতে হবে। তারপর ঘটটি উলো ধ্বনি দিয়ে স্থাপন করতে হবে। 

mongol ghot

অন্নপূর্ণা পূজার চাল, সিদ্ধি নিবেদন

মাঅন্নপূর্ণা এবং বাবা মহাদেবের উদ্দেশ্যে সিদ্ধি, চাল, ডাল নিবেদন করতে হবে। একটি বাটিতে দুধ, মধু ও কিছুটা ভাং মিশিয়ে বাবা মহাদেবকে নিবেদন করতে হবে।

sidhi nibedon

অন্নপূর্ণা পূজা শুরু

|| নারায়ণাদির অর্চনা ||

প্রতিটি  মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফুল নিয়ে ঘটের উপর নিবেদন করতে হবে।

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ নারায়ণায় নমঃ 

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শ্রীগুরুবে নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ গণেশায় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ দুর্গায়ৈ নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শিবায় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ লাক্সমীদেবই নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ স্বরস্বত্যৈ নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ কার্তিকেয় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ সর্ব দেবদেবীভ্যনম নমঃ

|| গুরু প্রণাম ||

মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফল নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত মন্ত্রে ঘটের উপর নিবেদন করতে হবে।

অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তংযেন চরাচরম্।

তৎপদাং  দর্শিতাং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।

|| ঘণ্টা পূজা ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্র উচ্চারণ করে পূজার ঘন্টার উপর ছিটিয়ে দিতে হবে।

ঘণ্টা পূজা মন্ত্র :ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে জয়ধ্বনি- মন্ত্র-মাতঃ স্বাহা।

|| গণেশ পূজা ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে ভগবান গনেশের প্রণাম মন্ত্র উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে।

|| অন্নপূর্ণার ধ্যান মন্ত্র ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত মন্ত্র উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে।

ধ্যান মন্ত্র: “রক্তাং বিচিত্রবসনাং নবচন্দ্রচূড়ামন্নপ্রদান-নিরতাং স্তনভার নম্রাম্। নৃত্যন্তমিন্দুশকলাভরণং বিলোক্য হৃষ্টাং ভজে ভগবতীং ভবদুঃখহন্ত্রীম্।।”

তারপর হাত জোড় করে অন্নপূর্ণার প্রণাম মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে।

প্রণাম মন্ত্র: “অন্নপূর্ণে সদা পূর্ণে শঙ্কর-প্রাণবল্লভে। জ্ঞানবৈরাগ্যসিদ্ধার্থং ভিক্ষাং দেহি নমোহস্তুতে।”

|| অন্নপূর্ণার পূজা মন্ত্র ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত অন্নপূর্ণার পূজা মন্ত্র উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে। 

অন্নপূর্ণার পূজা মন্ত্র: “ওঁ সায়ুধায়ৈ সবাহনায়ৈ সালঙ্কারায়ৈ সপরিবারায়ৈ। ওঁ হ্রিং অন্নপূর্ণায়ৈ পরমেশ্বয্যে নমঃ।। ওঁ অন্নপূর্ণায়ৈ দেব্যৈ নমঃ”

|| অন্নপূর্ণার মূলমন্ত্র ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত অন্নপূর্ণার মূলমন্ত্র মন্ত্র উচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করতে হবে। 

অন্নপূর্ণার মূলমন্ত্র মন্ত্র: “হ্রীং নমো ভগবতী মাহেশ্বরী অন্নপূর্ণে স্বাহা :”

|| অন্নপূর্ণা পূজার পুষ্পাঞ্জলি ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল, তিনটি দূর্বা ও বেলপাতা নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত অন্নপূর্ণার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র উচ্চারণ করে তিনবার ঘটে নিবেদন করতে হবে।

পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র: “ওঁ অন্নপূর্ণে সদাপূর্ণে শঙ্করা প্রানভল্লভে। জনা ভৈরাগ্যা সিদ্ধারত্যম ভিক্ষ্যম দেহি নমোহস্ততে।।”

|| অন্নপূর্ণা প্রণাম মন্ত্র ||

হাত জোড় করে নিম্নলিখিত প্রণাম মন্ত্র উচ্চারণ করে প্রণাম জানাতে হবে। 

আরতি পর্ব

সাধারণ নিত্য পুজোয় যা যা দিয়ে আরতি করা হয় অর্থাৎ ধূপকাঠি, তেলের পঞ্চপ্রদীপ, ঘিয়ের প্রদীপ, কর্পূর এবং সুগন্ধি ধুনো দিয়ে মা অন্নপূর্ণাকে আরতি করতে হবে।

নিত্যপূজার ক্ষেত্রে এই পাঁচটি জিনিস দিয়েই প্রত্যেকদিন আরতি করা ভালো। প্রতিটি দ্রব্য দিয়ে পাঁচ থেকে সাতবার আরতি করতে হবে।

মা অন্নপূর্ণার কাছে প্রণাম করে নিজের মনস্কামনা নিবেদন করে নিতে হবে। মাকে পূজা গ্রহণ করার জন্য আবেদন করতে হবে এবং পূজার কোন ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

অন্নপূর্ণা পূজা সমাপ্ত

How to do Hanuman Jayanti at home: এখন ঘরে করুন হনুমান জয়ন্তী খুব সহজেই

hanuman jayanti at home

পুরুষোত্তম শ্রী রামচন্দ্রের সবথেকে বড় ভক্ত হলেন শ্রী হনুমান। চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা তিথিতে অর্থাৎ রামনবমীর ঠিক ছয়দিন পর শ্রীহনুমানজি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।তাই এই বিশেষ তিথিতেই হনুমান জয়ন্তী (Hanuman Jayanti at home) পালন করা হয়।

মনে করা হয় হনুমানজি অমর। কলিযুগের জাগ্রত দেবতারূপে হনুমানজির পুজো করা হয়। ছেলে মেয়েরা নির্বিশেষে হনুমানের পূজা করতে পারেন।

Table of Contents

Hanuman Jayanti at home

ঘরোয়া হনুমান জয়ন্তী (Hanuman Jayanti at home) পূজা পর্ব

সনাতন হিন্দুধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী জীবনের সকল বাধা বিপত্তি এবং সংকট কাটিয়ে উঠতে শ্রীহনুমানজি আমাদের সহায়তা করেন। তাই তো তিনি সংকটমোচন শ্রী হনুমান। হনুমান জয়ন্তীতে ভক্তি ও নিষ্ঠা সহকারে শ্রী হনুমানজির পুজো (Hanuman Jayanti at home) করলে তিনি ভক্তকে সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করেন। আচমন করা হচ্ছে যেকোনো পূজা শুরু করার প্রথম ধাপ।

যে কোনো পূজা শুরুর পূর্বে নিজেকে শুদ্ধ করে নেওয়া উচিৎ। এই শুদ্ধ করে নেওয়ার পক্রিয়াকে আচমন ক্রিয়া বলে। আচমনের জন্য বিষ্ণু নাম স্মরণ করে এই পক্রিয়া সম্পাদন করতে হবে। আচমনের পদ্ধতিটি বিস্তারিত ভাবে আমাদের Ghoruapujaঘরোয়াপূজার সাধারণ নিয়ম পেইজটিতে  উল্লেখ করা হয়েছে।

পুষ্পশুদ্ধি প্রক্রিয়াটি ঘরোয়াপূজার- ঘরোয়াপূজার সাধারণ নিয়ম পেইজটিতে  উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে পূজার সকল অত্যাবশ্যক পক্রিয়াগুলি সুন্দর ও সহজভাবে ব্যখ্যা করা হয়েছে।

ঘরোয়া হনুমান জয়ন্তী আসন প্রস্তুতি

যদি ঘরের আসনে প্রতিষ্টিত হনুমান ঠাকুর থাকেন সেটা ছবি বা মূর্তি যেভাবেই হউক, তা সবসময় লাল রঙের কাপড় পেতে বসাতে হবে। 

আর যদি আলাদা আসন পেতে পূজা করতে হয় তাহলে একটি পরিষ্কার কাঠের পিঁড়ির ওপর গঙ্গাজল ছিটিয়ে লাল রঙের কাপড় পেতে নিতে হবে। তার ওপর আরো কিছুটা গঙ্গাজল ছিটিয়ে কিছুটা ফুলের পাপড়ি এবং গোটা আতপ চাল দিতে হবে। এইভাবে হনুমানজির পূজার আসন প্রস্তুত করে নিতে হবে। 

ঘরোয়া হনুমান জয়ন্তী প্রদীপ প্রজ্জ্বলন

প্রত্যেক বিশেষ পুজোর মতোই হনুমান জয়ন্তীর দিন (Hanuman Jayanti at home) হনুমানজির উদ্দেশ্যে নতুন মাটির প্রদীপ প্রজ্বোলন করতে হয়। প্রদীপের লাল রঙের সলতে ব্যবহার করা খুব শুভ। লাল রঙের সলতে না পাওয়া গেলে সাদা রঙের সলতে ব্যবহার করে যেতে পারে।

প্রদীপে চামেলির তেল বা ঘি দেওয়া হয়। চামেলির তেল বা ঘি ছাড়াও সর্ষের তেল দিয়েও প্রদীপ জ্বালানো যায়। প্রদীপে তিনটে মেটে সিঁদুরের ফোঁটা দিতে হবে। একই সঙ্গে ধূপকাঠি, ধূপ ও ধরিয়ে নিতে হবে।

ঘরোয়া হনুমান জয়ন্তী স্নানাভিষেক পর্ব

তার জন্য একটি পাত্রের ওপর কিছুটা ফুলের পাপড়ি দিয়ে হনুমানজির মূর্তিটি বসিয়ে নিতে হবে। পঞ্চামৃত দিয়ে হনুমানজির অভিষেক করতে হবে।

একটি পাত্রে কাঁচা দুধ, দই, ঘি, মধু এবং শর্করা বা চিনি একসাথে মিশিয়ে পঞ্চামৃত তৈরি করে করে হনুমানজির পূজার মন্ত্র “ওঁ হনুমতে নমঃ” স্মরণ করতে করতে ঞ্চামৃত দিয়ে হনুমানজির অভিষেক করে নিতে হবে।

এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে আমি হনুমানজির বিগ্রহটি ধুয়ে নিয়ে একটি সূতির পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মূর্তিটি মুছে নিয়ে আসনে বস্তাতে হবে। 

যদি ছবি থাকে সেক্ষেত্রে একটি পরিষ্কার কাপড় গোলাপ জল, গঙ্গাজল অগরু মিশ্রিত জলে ভিজিয়ে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হনুমানজিৎ ছিবিটি মুছে নিতে হবে।

ঘরোয়া হনুমান জয়ন্তী (Hanuman Jayanti at home) পুজো শুরুর পর্ব

Hanuman Jayanti at home: শ্রীরামচন্দ্রের পুজো

শ্রী হনুমানজির পুজো (Hanuman Jayanti at home) শুরু করার আগে আমাদের শ্রীরামচন্দ্রের পুজো করে নিতে হয়। যদি ঘরে ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের কোনো বিগ্রহ বা ছবি থাকে আগে সেখানে পুজো করে নিয়ে তারপর হনুমানজির পুজো শুরু করতে হবে।

যদি ঘরে শ্রীরামচন্দ্রের কোনো বিগ্রহ বা ছবি না থাকে তাতে কোনো অসুবিধা নেই কুলগুরুকে শ্রীরামচন্দ্র জ্ঞানে পুজো করে নিতে পারেন। শ্রীরামচন্দ্র হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সবজাগায় সবকিছুতে বিরাজমান। 

শ্রীরামচন্দ্রের পুজো
Source: Belur Math

আমরা এখানে ধরে নিচ্ছি আপনার ঘরে শ্রীরামচন্দ্রের বিগ্রহ আছে। প্রথমে শ্রীরামচন্দ্রকে শ্বেতচন্দনের তিলক পরিয়ে দিতে হবে।  শ্রীরামচন্দ্রের উদ্দেশ্যে শ্বেতচন্দন সহযোগে তুলসী পাতা এবং তুলসী দল নিবেদন করে দিতে হবে।

শ্রীরামচন্দ্রের পূজার মন্ত্র:- ওঁ শ্রীরামচন্দ্রায় নমঃ

শ্বেতচন্দন সহযোগে একটি হলুদ ফুল আমি শ্রী রামচন্দ্রের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে দিতে হবে। 

হনুমানজির বুকেই শ্রীরামচন্দ্র থাকেন, তাই হনুমানজির বিগ্রহের বুকে শ্বেতচন্দন সহযোগে একটি তুলসীপাতা আমি শ্রীরামচন্দ্রের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে দিতে হবে।

হাত জোড় করে আমি শ্রী রামচন্দ্রের প্রণাম মন্ত্র পাঠ করে নিচ্ছি।

শ্রীরামচন্দ্রের প্রণাম মন্ত্র:- 

রামায় রামভদ্রায় রামচন্দ্রায় বেধসে।  

রঘুনাথায় নাথায় সীতায়াহ পতয় নমঃ।।

শ্রীরামচন্দ্রের পূজা সমাপ্ত

ঘরোয়া হনুমান জয়ন্তী মূল পুজো শুরু

শ্রীরামচন্দ্রের পুজো সম্পন্ন করে হনুমানজির পুজো (Hanuman Jayanti at home) শুরু করতে হবে। প্রথমে হনুমানজিকে মেটে সিঁদুরের (কমলা রঙের) তিলক পরিয়ে দিতে হবে। মেটে সিঁদুর না থাকলে লাল রঙের সিঁদুর ব্যবহার করা করা যেতে পারে। তারপর ভগবান হনুমানকে লাল চন্দনের তিলক এবং পৈতে নিবেদন করতে হবে।

হনুমানজির পুজোয় (Hanuman Jayanti at home) একটি লাল জবার মালা, লাল চন্দন সহযোগে হনুমানজিকে নিবেদন করে দিতে হবে। ভগবান হনুমানের গোলাপ ফুল অত্যন্ত ভালোবাসেন, গোলাপের মালা হনুমানজিকে নিবেদন করা যেতে পারে।

hanuman puja

যদি সম্ভব হয় তোমরা হনুমান জয়ন্তীর দিন একটা ছোট্ট পিতলের গদা বা একটা ছোট্ট রুপোর গদা হনুমানজিকে উপহারস্বরূপ নিবেদন করতে পারো। উনি এতে অত্যন্ত খুশি হন।

সম্ভব হলে হনুমানজির জন্য একটি অশথ পাতার মালা তৈরি করে নিবেদন করা যেতে পারে। পাঁচ, সাত অথবা এগারোটি অশথ পাতা দিয়ে একটি মালা তৈরী করে নিতে হবে। অশথ পাতার প্রতিটি পাতায় সিঁদুর দিয়ে জয় শ্রীরাম লিখে নিতে হবে। 

হনুমানজির পূজার  মন্ত্র “ওঁ হনুমতে নমঃ” পাঠ করতে করতে মালা পরিয়ে দিতে হবে। একই মন্ত্র উচ্চারণ করে হনুমানজির বিগ্রহে বা ছবিতে তিনটি লাল ফুল লাল চন্দন সহযোগে নিবেদন করে দিতে হবে। তারপর হাতজোড় করে শ্রী হনুমানজির প্রণাম মন্ত্র পাঠ করতে হবে।

শ্রী হনুমানজির প্রণাম মন্ত্র:-

মনোজবং মারুততুল্য বেগং জিতেন্দ্রীয় বুদ্ধিমতং বরিষ্ঠং। 

বাতাতজং বানরযুথং মুখখং শ্রীরামদূতং শীর্ষ নমামি।।

একটি পান পাতার উপর মেটে সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে তার উপর একটি গোটা সুপারি, পাঁচটা গোটা লবঙ্গ এবং পাঁচটা গোটা এলাচ সহযোগে ভগবান হনুমানজিকে নিবেদন করতে হবে। পুজোর পরে এগুলি একটা লাল কাপড়ে বেঁধে ঘরে রেখে দিতে হবে।

ভোগ নিবেদন

ভোগ নিবেদন করার জন্য আমি একটি পানপাতার ওপর গুড় আর ছোলা নিয়ে নিয়ে নিবেদন করতে হবে। গুড় আর ছোলার ভোগ হনুমানজির অত্যন্ত প্রিয়। ফুল এবং তুলসী পাতার সহযোগে মিষ্টি, ফল হনুমানজিকে নিবেদন করতে হবে।

আরতি পর্ব

ভগবান হনুমানকে ধূপকাঠি, ফুল, সরষের তেলের প্রদীপ, ঘিয়ের পঞ্চ প্রদীপ, দিয়ে নবার করে আরতি করতে হবে।

হনুমান চালিসা পাঠ

হনুমান জয়ন্তীর দিন (Hanuman Jayanti at home) অবশ্যই হনুমান চালিসা পাঠ করতে হবে। সম্ভব হলে একুশ থেকে একচল্লিশবার হনুমান চালিসা পাঠ করা যেতে পারে। যদি একচল্লিশবার সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত এগারোবার অবশ্যই হনুমান চালিসা পাঠ করতে হবে। 

হনুমানজীর পুজোর পরে অবশ্যই হনুমান চালিসা পাঠ করতে হবে। হনুমানজির মাতা দেবী অঞ্জনা এবং হনুমানজির আরাধ্য ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের নাম স্মরণ করে হনুমান চালিসা পাঠ করা শুরু করতে হবে।

শ্রীহনুমানাষ্টক পাঠ

হনুমান চালিসা পাঠ করা হয়ে যাওয়ার পর শ্রী হনুমানাষ্টক পাঠ করে নিতে হবে। হনুমান চালিসা পাঠ শেষ করে। 

মনে মনে প্রভু হনুমানজিকে পূজা গ্রহণ করার জন্য আবেদন করতে হবে. এই বলে  “হে প্রভু আমার এই পূজা তুমি গ্রহণ করো আর আমাকে তুমার আশীর্বাদ প্রদান করো” করজোড়ে প্রণাম করতে হবে।

এরপর ভগবান হনুমানজির উদ্দেশ্যে প্রণাম জানিয়ে নিজের মনস্কামনা নিবেদন করে, পুজোয় কোনও ভুলত্রুটি হয়ে গেলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে নিতে হবে। 

দৈনিক হনূমান পূজা

দৈনিক হনূমান পূজায় শ্রী রামচন্দ্রের পূজার প্রয়োজন পড়েনা, শুধু হনূমান চালিশা পাঠ করে পূজা সম্পন্ন করা যায়। নিত্য পূজায় স্নানাভিষেক, তিলক বা শৃঙ্গার, পুষ্প নিবেদন, ও ভোগ আরতি পর্ব শেষ করে চালিশা পাঠ দিয়ে পূজা সম্পন্ন করা যায়।

হনূমান জয়ন্তী পূজা (Hanuman Jayanti at home) সমাপ্ত

How to do Durga Puja at home: সহজ পদ্ধতিতে ঘরে করুন দূর্গা পূজা

Durga puja

আমরা এই নিবন্ধে জানবো কিভাবে আপনার ঘরে Durga Puja (Durga Puja at home) করবেন। অনেকেই চায় নিজেদের ঘরে দূর্গা পূজা (Durga Puja at home) করতে কিন্তু পূজার কঠিন নিয়ম-নীতি আর খরচের কথা ভেবে অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মায়ের পূজা করে উঠতে পারেনা।

দূর্গা পূজা (Durga Puja) বাঙালি ও অবাঙালি সবার কাছে আবেগের পূজা। প্রতি বছর দুই সময়ে দূর্গা পূজা (Durga Puja) হয়ে থাকে। বছরের প্রথম দিকে বৈশাখ মাসে বাসন্তী পূজা আর শরৎ কালে হয় শারদীয়া বা আমরা যাকে দূর্গা পূজা বলে থাকি, বাঙালির প্রধান পূজা। 

Table of Contents

Durga Puja at home: কিভাবে করবেন

আমরা এরকম কিছু সহজ উপাচার উল্লেখ করবো যেগুলো অনশরণ করে পুজোর তিনদিন যে কেউ দূর্গা পূজা (Durga Puja) নিজেদের ঘরে অনায়াসে করতে পারবেন। Durga Puja -র খরচ ও থাকবে সাধ্যের মধ্যে, এই পূজার খরচ তিন থেকে চার হাজার টাকার মধ্যেই হয়ে যাবে।

Durga Puja at home
Source: Belur Math

ঘরে দূর্গা পূজা করতে কি কি লাগে?

Durga Puja at home -র উপকরণ:

  • ফুল (অপরাজিতা ফুল, লাল জবার মালা অবশ্যই দরকার), দুটো পানপাতা, লালফুল, সিস্ ডাব, পদ্ম ফুল, বেল পাতা, মাটির ঘট/ কলস, আম পল্লভ, বেলপাতার মালা( আপনি বেলপাতা কিনে বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন ), দূর্বা।

  • দুটো পৈতে, পাঁচরকমের ফল, পাঁচরকমের মিষ্টি, দুটো চাঁদমালা, ছোট গামছা।

  • একটি পঞ্চপ্রদীপ, একটি মাটির প্রদীপ, একুশটি মাটির প্রদীপ অষ্টমী সন্ধি পুজোর জন্য, পঞ্চ শস্য, অতোব চাল, সুপোরী, গঙ্গামাটি অথবা ফুল গাছের তলার মাটি এবং গঙ্গাজল না থাকলে পরিষ্কার টেপের জল। ।

  • সিঁদুর, আলতা, শাঁখা- পোলা, শাড়ী, মালা, লবঙ্গ, এলাচি এবং লাক্সমির কড়ি।

Durga Puja at home -র প্রণালী

মহাপূজার তিনদিন একই পদ্ধতিতে পূজা শুরু করতে হবে।  আচমন পর্ব থেকে মা দুর্গার জপ মন্ত্র পাঠ পদ্ধতি একই থাকবে।  পুস্পঞ্জলি মন্ত্র পূজা বিশেষে আলাদা হবে। আরতি কিভাবে করতে হবে তা বিশদে পূজার সাধারণ নিয়ম পেইজেতে উল্লেখ করা হয়েছে।

মায়ের অভিষেক

ঘরে দূর্গা পূজার (Durga Puja) চার দিন মায়ের অভিষেক করতে হবে একই পদ্ধতিতে।

মায়ের অভিষেকের নিয়ম

একটা তাম্র পাত্রে গঙ্গাজল, গোলাপজল, আগ্রো, চন্দন, ফুল এবং অষ্টগন্ধা মিশিয়ে অভিষেকের জল তৈরী করতে হবে। তারপর মার অভিষেক করতে হবে। 

যদি মার ছবিতে অভিষেক করতে হয় তাহলে একটি পরিষ্কার সূতির কাপড় সেই জলে ভিজিয়ে, ভালো করে চিপে শুকনো করে মায়ের ছবিটি মুছে নিতে হবে।। 

মাটির মূর্তি হলে শঙ্খ দিয়ে করা যেতে পারে। শঙ্খ দিয়ে মায়ের মূর্তির সামনে আরতি করার মতো করে চক্রকারে করা যেতে পারে।

দূর্গা পূজার (Durga Puja) চার দিন এই একই উপচারে মার অভিষেক করতে হবে। অভিষেকের অর্থ হচ্ছে স্নান করানো।)

অভিষেকের পর:

মাকে সাঁজানো

সপ্তমী পূজোর দিন:

Durga Puja -র প্রথম দিন মাকে সাজাতে হবে নিম্নলিখিত ভাবে।

মাকে সিঁদুরের ফোঁটা দিতে হবে একই সঙ্গে যদি আপনার মূর্তিটি অথবা ছবিটিতে মাদুর্গা সপরিবারে থাকেন তাহলে সবাইকে লাল সিঁদুরের ফোঁটা দিতে হবে।  

মাকে মালা পড়ানো, স্বচন্দন বিল্লপত্র, একটি লাল ফুল মায়ের চরণে দিতে হবে। তারপর মাকে চাঁদমালা নিবেদন করতে হবে। মাকে আলতা, শাড়ী,  সিঁদুর এবং শাঁখা-পোলা নিবেদন করতে হবে 

অষ্টমী, নবমী এবং দশমী পূজোর দিন:

মাকে মালা পড়ানো, স্বচন্দন বিল্লপত্র মায়ের চরণে দিতে হবে। একটি লাল ফুল মায়ের চরণে দিতে হবে।

Durga Puja at home -র ঘট স্থাপন

তাম্র ঘটে সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিক চিহ্ন অঙ্কন করতে হবে। একই ভাবে সিস্ ডাব অথবা নারিকেলের উপর স্বস্তিক অঙ্কন করতে হবে। আম পল্লভের প্রতিটি পাতায় সিঁদুর ফোঁটা দিতে হবে। 

গঙ্গা মাটির উপর অতোব চাল, পঞ্চশস্য দিয়ে ঘট বসাতে হবে। ঘটে গঙ্গা জল দিয়ে একটি সুপোরী, একটু অতোব চাল ঘটের  জলে দিতে হবে। তারপর ঘটের উপর আমি পল্লভ দিতে হবে। আম পল্লভের উপর সিস্ ডাব অথবা নারিকেল রাখতে হবে। সিস্ ডাবের উপর পৈতে, চাঁদমালা, ফুলের মালা এবং গামছা রাখতে হবে। 

একটি আলাদা পান পাতায় তিনটি সিঁদুর ফোঁটা যুক্ত সুপোরী সহ তিনটি সিঁদুর ফোঁটা যুক্ত হলুদের গাঁট, একটি হরিতকি ধুর্বা দিয়ে মায়ের সামনে রাখতে হবে।

ঘট স্থাপন

Durga Puja at home -র ঘট স্থাপন মন্ত্র

যদি মন্ত্র পাঠ কঠিন হয় তাহলে ঘট স্থাপন মন্ত্র ছাড়াও করা যেতে পারে।

ঘট স্থাপন করে, হাত করজোড় করে এই মন্ত্র বলতে হবে:-

ওঁ সর্বতীর্থোদভবং বারি সর্বদেবসমন্বিতম্।

ইমং ঘটং সমারুহ্য তিষ্ট দেবী গনৈ: সহ ।।

ঘট স্পর্শ করিয়া তিনবার এই মন্ত্র পাঠ করতে হবে :-

ওঁ স্থাত স্বীং স্থিরো ভব।

ওঁ তুর্ভুবঃ স্বঃ তৎ সবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ।।

নিজের সম্মুখে ভূমিতে বাঁদিকে ত্রিকোণ, তাহার বাইরে বৃত্ত ও তাহার বাহিরে চতুস্কোন মণ্ডল অঙ্কিত কবিয়া তদুপরি পুজা করে এই নিম্নলিখিত মন্ত্র বলতে হবে 

ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে আধারশক্ত্যাদিভ্যো নমঃ।

‘ফট’ মন্ত্রে কোশা স্থাপন করে, ‘নমোঃ মন্ডে জলপূর্ণ করিয়া “ওঁ” মন্ত্রে কোশার অগ্রভাগে ফুল দিতে হবে।  ‘ওঁ’ মন্ত্রে দূর্বা, অক্ষত বিশ্বপত্র, চন্দন, পুষ্প ও তুলসী কোশার জলে নিক্ষেপ করবো, পরে জল স্পর্শ করে নিম্নলিখিত মন্ত্র বলতে হবে

“ওঁ সঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবীর সরস্বতী, নর্মদে সিন্ধু কাবেরি জলেইম্মিন সন্নিধিং কুরু।”

Durga Puja at home: পুষ্পশুদ্ধি

পূজার বেলপাতা, দূর্বা, নীল অপরাজিতা ফুল সবগুলোর উপর চন্দন ছিটিয়ে দিতে হবে। পুজোর ফুলগুলিকে শুদ্ধ করে নিতে হবে পুষ্পশুদ্ধি মন্ত্র পড়ে।

Durga Puja at home: ফল নিবেদন

দূর্গা পূজার (Durga Puja) -র তিন দিন ফল নিবেদন করতে হবে।

মাকে গোটা ফল, মিষ্টি, নৈবদ্য( একটি পাত্রে পাঁচটি নারকেল নাড়ু, চাল-ডাল, বাতাসা সহ) মাকে নিবেদন করতে হবে।

fol nibedon

Durga Puja at home: দীপ-ধূপ জ্বালানো

দীপ ধূপ জ্বালিয়ে পূজো শুরু করতে হবে। মা দুর্গার ঘিয়ের প্রদীপ খুব পছন্দ। ঘি দিয়ে একটি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে নিতে হবে। চেষ্টা করুন পুজোর তিন দিন ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালাতে। তিলের তেল প্রদীপ নিত্য পূজায় ব্যবহার করা যেতে পারে।

deep lighting

Durga Puja at home: সপ্তমী পূজো শুরুর পর্ব

কপাঁলে সিঁদুর ও চন্দনের তিলক দিতে হবে। তারপর হাতে গঙ্গা জল নিয়ে “ওঁ বিষ্ণু” তিন বার বলে নিজেকে শুদ্ধ করে নিতে হবে।

|| বিষ্ণু স্মরণ ||

হাতজোড় করে বিষ্ণু স্মরণ করে নিতে হবে।

|| সূর্যাঘ্য নিবেদন ||

কোশিতে জল, লাল ফুল, অতোব চাল, রক্ত চন্দন, তিল এবং দূর্বা নিয়ে হাতজোড় করে জপমন্ত্র করতে হবে।

|| সংকল্প করা ||

একটি কুশিতে দুর্বা, তিল, হরিতকি, গঙ্গাজল, লালফুল আতচাল নিয়ে করজোড় করে মন্ত্র জপ করতে হবে।

মন্ত্রঃ- “নমঃ বিষ্ণু তৎ সৎ (মাসের নাম, পক্ষের নাম, তিথির নাম, নিজের গোত্র, শ্রী নিজের নাম, ফল কামনা করে মনে) পূজনং ব্রতং অহং করিষ্যমি।।” – বলে তাম্রপাতে ঢেলে ঢেলে দিতে হবে।

সংকল্পের পর প্রণাম মন্ত্র:- “সংকল্পি তার্থা সিদ্ধাসন্ত”

|| নারায়ণাদির অর্চনা ||

প্রতিটি  মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফল নিয়ে ঘটের উপর নিবেদন করতে হবে।

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ নারায়ণায় নমঃ 

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শ্রীগুরুবে নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ গণেশায় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ দুর্গায়ৈ নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শিবায় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ লাক্সমীদেবই নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ স্বরস্বত্যৈ নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ কার্তিকেয় নমঃ

এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ সর্ব দেবদেবীভ্যনম নমঃ

|| গুরু প্রণাম ||

মন্ত্র উচ্চারণ করে হাতে কিছু ফল নিয়ে হাতজোড় করে নিম্নলিখিত মন্ত্রে ঘটের উপর নিবেদন করতে হবে।

অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তংযেন চরাচরম্।

তৎপদাং  দর্শিতাং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।

|| ঘণ্টা পূজা ||

হাতে লাল চন্দন সহযোগে কিছু ফুল নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্র উচ্চারণ করে পূজার ঘন্টার উপর ছিটিয়ে দিতে হবে।

ঘণ্টা পূজা মন্ত্র :– ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে জয়ধ্বনি- মন্ত্র-মাতঃ স্বাহা।

|| গণেশ পূজা ||

গণেশ পুজো দিয়ে ঘরে দূর্গা পূজা শুরু করতে হবে। সবার আগে হাতে ফুল নিয়ে হাতজোড় করে গণেশ মন্ত্র পাঠ করতে হবে।

ganesh puja

|| মাদূর্গার জপমন্ত্র ||

“ওঁ হ্রীং চামুন্ডায়ৈ নমঃ” (তিনবার)

তারপর হাতে ফুল নিয়ে দেবীর নিন্মলিখিত ধ্যনমন্ত্রপথ করতে হবে।

ধ্যানমন্ত্র:ওঁ জটা জুট সমায়ুক্তাম অর্দ্ধেন্দুকৃত শেখরাম। 

লোচন এয় সংযুক্ত্যাং পুর্ণেন্দুসদৃ শাননাম।।

অতসী পুষ্প বর্ণাভাং সুপ্রতিষ্ঠাং সুলোচনাম। 

নবযৌবণ সম্পন্নাং  সর্বাভরণ ভূষিতাম্।।”

প্রণাম মন্ত্র:-

“ওঁ জয়ন্তি মঙ্গলা কালি ভদ্রকালী কপালিনী। 

দুর্গা শিবা ক্ষমাধাত্রি স্বাহা স্বধা নমোহস্ততে।।

ওঁ হ্রীং শ্রীং দুর্গায়ৈ নমঃ”

দেবীর মানস পূজা:- মনে মনে বলতে হবে,

“মা অষ্টশক্তি সহ এখানে এসে আমার পূজা গ্রহন করো, আমার কামনা, বাসনা, রিপু সমূহের ক্ষয় করে আমায় পবিত্র করো”

|| সপ্তমী পূজার পুষ্পাঞ্জলী ||

aroti purbo
Source: Belur Math

আরতি পর্ব শুরু করতে হবে:-

প্রথমে পঞ্চপ্রদীপ দিয়ে আরতি করতে হবে, তারপর ফুল দিয়ে আরতি করতে করে ঘটে উপর দিয়ে দিতে হবে সেই ফুল, সর্বশেষে কর্পূর প্রদীপ দিয়ে পূজা করতে হবে। বিশদে আরতি পদ্ধতি  জানতে হলে পড়ুন।

আরতি পর্ব শেষ করে প্রণাম মন্ত্র পথ করে সপ্তমী পূজা শেষ করতে হবে। 

প্রণাম মন্ত্র:- “এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ নারায়ণায় নমঃ”

Durga Puja at home: সপ্তমী পূজা সমাপ্ত

Durga Puja at home: অষ্টমী পূজো শুরুর পর্ব

অষ্টমী পূজার পুষ্পাঞ্জলী

ঘরোয়া দূর্গা মহাপূজা

(প্রথমবার হাতে পুষ্পে নিয়ে)

হাতে ফুল নিয়ে নমঃ মহিষগ্নি মহামায়ে চামুন্ডে মুন্ডমালিনী।  

আয়ুবারোগ্য বিজয়ং দেহি দেবী নমোস্ততে।।

(দ্বিতীয়বার হাতে ফুল নিয়ে)

নমঃ সৃষ্টিস্তিতিবিনাশং শীক্তভূতে সনাতনি। 

গুনাশ্রয়ে গুনময়ে নারায়ণী নমোস্ততে।।

(তৃতীয়বার হাতে ফুল নিয়ে)

নমঃ শরণাগতদীর্নাত পরিত্রান পরায়ণে। 

সর্বস্যাতিহরে দেবী নারায়নি নমোস্ততে।।

(হাতজোড় করে প্রণাম মন্ত্র)

জয়ন্তি মঞ্চলাকালী ভদ্রকালী কপালিনী। 

দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোস্ততে।।

আরতি পর্ব শুরু করতে হবে:-

আরতি পূজা করার পদ্ধতি। 

আরতি পর্ব শেষ করে প্রণাম মন্ত্র পথ করে অষ্টমী পূজা শেষ করতে হবে। 

প্রণাম মন্ত্র:- এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ নারায়ণায় নমঃ

সন্ধি পূজা :- সন্ধি পুজোর নির্দিষ্ট সময়ে মা দূর্গার সামনে একটি মাটির থালায় 21 -টি  মাটির প্রদীপ ঘি সহযোগে জ্বালাতে হবে। যদি সম্ভব হয় 108 প্রদীপ জ্বালানো যেতে পারে।

সন্ধি পুজো

Durga Puja at home: অষ্টমী পূজা সমাপ্ত

Durga Puja at home: নবমী পূজো শুরুর পর্ব

maa durga

নবমী পূজার পুষ্পাঞ্জলী

(প্রথমবার হাতে পুষ্পে নিয়ে)

কালি কালি মহাকালি কালিকে কালরাত্রিকে।

ধর্ম্মকামপ্রদে দেবি নারায়নি নমোস্ততে।।

(দ্বিতীয়বার হাতে ফুল নিয়ে)

লক্ষি লজ্জ্যে মহাবিদ্যে শ্রদ্ধে পুষ্টি স্বধে ধ্রুবে।

মহারাত্রি মহামায়ে নারায়নি নমোস্ততে।।

(তৃতীয়বার হাতে ফুল নিয়ে)

কলাকাষ্ঠাদিররূপেণ পরিণাম প্রদায়িনী। 

বিশ্বস্যোপরতো শক্তে নারায়নি নমোস্ততে।।

(হাতজোড় করে প্রণাম মন্ত্র)

সর্বস্বরূপে সর্বেশে সর্বশক্তি সমন্বি তে। 

ভয়েভ্যস্ত্রাহি নো দেবি দুর্গে দৌব নমোস্ততে।।

আরতি পর্ব শুরু করতে হবে:-

একই পদ্ধতি 

আরতি পর্ব শেষ করে প্রণাম মন্ত্র পথ করে নবমী পূজা শেষ করতে হবে। 

প্রণাম মন্ত্র:- “এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ নারায়ণায় নমঃ”

Durga Puja at home: নবমী পূজা সমাপ্ত

Durga Puja at home: দশমী পূজা শুরুর পর্ব

দশমী পূজা
Belur Math Puja

বাকি তিনদিনের মতো একই পদ্ধতিতে পূজা শুরু করতে হবে। আচমন করে সূযার্ঘ্য দিয়ে সংকল্প করে নারায়াণদির অর্চনা, ঘন্টা পূজা গনেশ পূজা জপ মন্ত্র পাঠ করে নিতে হবে। তারপর দুর্গার ধ্যান মন্ত্র  পাঠ (শুধু দশমী পূজার দিন ) করতে হবে। সবশেষে দুর্গার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র  দিয়ে পুষ্পাঞ্জলি পর্ব সমাপন করে আরতি শুরু করতে হবে।

আরতি পর্ব শুরু করতে হবে:-

একই পদ্ধতি 

আরতি পর্ব শেষ করে প্রণাম মন্ত্র পথ করে দশমী পূজা শেষ করতে হবে। 

প্রণাম মন্ত্র:- “এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ নারায়ণায় নমঃ”

Durga Puja at home: ঘট বিসর্জন

ঘটের জল ফেলার আগে, সেই জল ঘরের সর্বত্র ছিটিয়ে দেবেন ইহা শান্তির জলের মতো কাজ করবে। নিজের মাথায় এবং ঘরের বাকি সদস্যদের মাথায় একটু ছিটিয়ে দেবেন। চরণামৃত এর মতো করে হাতে কিছটা জল গ্রহণ করবেন। 

শহর অঞ্চলে জলাশয় কিংবা পুকুর পাওয়া খুব চাপের। যদি বাড়ির কাছে পরিষ্কার জলাশয় না থাকে সেক্ষত্রে ঘটের জল ফুল গাছের নিচে অথবা বেসিনে ফেলে দিতে পারেন। একই রকমভাবে পূজার ফুল গুলিকে একটি প্যাকেটে ভরে কোথাও পরিষ্কার জাগায় বা যেখানে নিত্যদিনের বর্জ্য ফেলা হয় সেখানে ফেলে দিতে পারেন।

দূর্গা পূজা সমাপ্ত